অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় - অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায়

অগ্নি দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতার পাশাপাশি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। আজকের আর্টিকেল থেকে জানবেন অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় কি সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে।
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় - অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায়

“দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা” এর আজকের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব প্রাকৃতিকভাবে, বৈদ্যুতিক শট সার্কিট, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায় অর্থাৎ অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে।

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়

অগ্নিকাণ্ড বা অগ্নি দুর্ঘটনা এমন একটি মারাত্মক বিপদ যেটি মুহূর্তের মধ্যে শত শত প্রান এবং শত শত কোটি টাকার মাল ধ্বংস করে দিতে পারে। অগ্নি দুর্ঘটনা মূলত মানুষের অসচেতনতার কারণেই হয়ে থাকে। আমাদের দেশে যতগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ রয়েছে তারপরেই অগ্নি দুর্ঘটনা সবচেয়ে ভয়াবহ। বিভিন্ন উপায়ে এই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। 
যেমন বৈদ্যুতিক সরকার সার্কিট থেকে, সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরণ এর মাধ্যমে, দিয়াশলাই এর কাঠি অথবা জ্বলন্ত সিগারেটের মাধ্যমে ইত্যাদি। দিনে দিনে নগরায়ন বৃদ্ধির ফলে ভবন নির্মাণের নিয়ম কানুন না মেনে যত্রতত্র অনিয়মিত এসব ভবন তৈরি করার হচ্ছে। শহরের অধিকাংশ দালানেই অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের উপস্থিতি থাকে না। 

এছাড়া অগ্নিকাণ্ড ঘটার যে যেসব সূত্রপাত বা উৎস রয়েছে সে সম্পর্কে অনেক শিক্ষিত মানুষও ওয়াকিবহাল নয়। প্রত্যেক বছর কয়েক শত কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায় শুধুমাত্র অগ্নি দূর্ঘটনার কারণে। এটি শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের ক্ষতি নয় বরং রাষ্ট্রীয় ভাবেও ক্ষতি হয়ে থাকে। তবে সচেতনতাই পারে এসব দুজন থেকে আমাদের রক্ষা করতে। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় অর্থাৎ অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায় কি সে বিষয়গুলো।

অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায়

    • যেকোনো ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো অসাবধানতা। তাই অগ্নি দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সাবধান হোন।
    • যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে আপনার বাসায় বা প্রতিষ্ঠানে সর্বদা অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র, পর্যাপ্ত পানি এবং বালু প্রস্তুত রাখুন।
    • খুব সহজে হাতের নাগাল পাওয়া যায় এমন স্থানে বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ স্থাপন করুন।
    • যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনার শুরুতে অর্থাৎ বাসা বাড়িতে অথবা বাণিজ্যিক ভবনে কোথাও আগুন লাগলে সব প্রথমে বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করুন।
    • বাসায় শিশুদের আগুন নিয়ে খেলা করতে দিবেন না।
    • আবাসিক ভবন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র মজুদ আছে সেটি নিশ্চিত করুন।
    • মাঝেমধ্যেই অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ নিন যাতে জরুরী মুহূর্তে প্রশিক্ষণ কাজে লাগাতে পারেন অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে।
    • রান্না করার চুলার আশেপাশে দাহ্য বস্তু রাখা উচিত নয়। আবার দাহ্য বস্তু রয়েছে এমন জায়গায় খোলাবাতি যেমন মোমবাতি জ্বালানো বিপজ্জনক।
    • ব্যবসায়িক ভবন কিংবা অফিস আদালতের প্রত্যেক সদস্য বা কর্মচারীর নিজ তাগিদে অগ্নি প্রতিরোধ, অগ্নি নির্বাপন, উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা জরুরী। এতে করে অগ্নি দুর্ঘটনার সময় বহু প্রাণ বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
    • গোডাউনে এবং অফিস আদালতে সম্পূর্ণরূপে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে এক টুকরো জ্বলন্ত সিগারেট বিরাট অগ্নিকাণ্ডের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
    • যেকোনো ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে অন্তত প্রতি বছরে একবার ভবনের বৈদ্যুতিক কেবল ও ফিটিংস অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা করুন।
    • প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং কর্মচারীদের প্রত্যেকেরই উচিত ভবনে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন আইন ২০০৩ অনুযায়ী অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।
    • অগ্নি দুর্ঘটনা সম্পর্কিত যেকোনো জরুরী প্রয়োজনে জরুরি সেবা কেন্দ্র ৯৯৯ এ অথবা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ ০২-৯৫৫৫৫৫৫ অথবা ১০২ নম্বরে ফোন করুন।
    • নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশনের প্রয়োজনীয় নাম্বার প্রত্যেককে সংগ্রহে রাখতে হবে।
    • সর্বোপরি আগুন লেগে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে অগ্নি প্রতিরোধ এবং নির্বাপনের যাবতীয় ব্যবস্থা পরিচালনা করতে হবে।
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় - অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায়

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়াতে করণীয়

অনেক পুরনো সিলিন্ডার, মানসম্পন্ন নয় এরকম সিলিন্ডারের ব্যবহার, সিলিন্ডারের সরঞ্জামাদি অত্যন্ত নড়বড়ে, ভুল জায়গায় অর্থাৎ অত্যাধিক তাপমাত্রা যুক্ত জায়গায় অথবা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সিলিন্ডার স্থাপন সহ বিভিন্ন কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটায়। চলুন জেনে নেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ড রোধে আমাদের করণীয় কি।
    • গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ অর্থাৎ গ্যাস সিলিন্ডার থেকে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে অবশ্যই মানসম্পন্ন সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হবে। তাই অনুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটর বা দোকান থেকে সিলিন্ডার কিনুন।
    • অসাবধানতার বশত অথবা অর্থ বাঁচাতে মরিচা ধরা, বেঁকে যাওয়া নিম্নমানের সিলিন্ডার ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন।
    • দোকান থেকে সিলিন্ডার কেনার সময় অবশ্যই সিলিন্ডারের লেবেল ও ম্যাটেরিয়াল সেফটি ডাটা শিট সতর্কতার সাথে দেখে নিন।
    • সিলিন্ডারের লিকেজ পরীক্ষা করার জন্য সাবানের ফেনা ব্যবহার করুন খোলা আগুনের পরিবর্তে।
    • সিলিন্ডার কখনোই মেঝেতে কাত করে রাখবেন না।
    • চলাচলে কোনরকম বিঘ্ন সৃষ্টি হয় না, শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে থাকে এমন স্থানে সিলিন্ডার সম্পূর্ণ খাড়া ভাবে রাখুন।
    • পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে এমন ঠান্ডা স্থানে সিলিন্ডার স্থাপন করুন।
    • ব্যবহার শেষে গ্যাস সংযোগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখুন। যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যবহার শেষে সিলিন্ডারের রেগুলেটর খুলে সেফটি ক্যাপ আটকে রাখতে পারেন।
    • যেকোনো দাহ্যবস্তু, আগুনের শিখা, আগুনের উৎস, চুলার তাপের পাশাপাশি যে কোন উচ্চতাপ থেকে সিলিন্ডার নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।
    • সিলিন্ডার বিস্ফোরণের দুর্ঘটনা এড়াতে সিলিন্ডার থেকে নিরাপদ দূরত্বে অথবা সিলিন্ডার থেকে কমপক্ষে এক ফিট উপরে এমন দূরত্বে চুলা স্থাপন করুন।
    • প্রথমে চুলা না জ্বালিয়ে আগে একটি ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে নিন।
    • গ্যাস সংযোগ দেয়ার পূর্বে অর্থাৎ চুলা জ্বালানোর পূর্বেই খেয়াল করুন ঘরে কোন গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছেন কিনা। গন্ধ পাওয়া যাক বা না যাক চুলা জ্বালানোর পূর্বে অবশ্যই জানালা খুলে দিন। জানালা খোলার পাঁচ মিনিট পরে গ্যাসের চুলা জ্বালুন।
    • চুলা জ্বালানোর পূর্বে যদি ঘরে গ্যাসের গন্ধ পান তবে কখনোই লাইট, ফ্যান সহ কোন ধরনের ইলেকট্রিক সামগ্রীর সুইচ অন করবেন না। এতে সাথে সাথে বিস্ফোরণ ঘটবে।
    • সিলিন্ডারের রেগুলেটর খোলার সময় কোন ধরনের বল প্রয়োগ করবেন না। রেগুলেটরের পিন ভেঙ্গে গেলে গ্যাস লিকেজ হতে শুরু করবে।
    • সিলিন্ডার ব্যবহারের পূর্বে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করুন যে প্রতি তিন বছর পরপর সিলিন্ডারের হাইডোলিক প্রেসার টেস্ট করা হয়।

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয়

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা সাধারণত অসাবধানতা বশত, ত্রুটিপূর্ণ সরঞ্জাম এবং বৈদ্যুতিক সুইচ ব্যবহার, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার মাধ্যমে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড রোধে আমাদের করণীয় কি চলুন জেনে নেই।
    • মানহীন অথবা নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাই মানসম্পন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার অন্যতম শর্ত। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের গুণগতমান নিশ্চিত করতে বিএসটিআই কর্তৃক অনুমোদিত যন্ত্রপাতি, তার, সরঞ্জাম ব্যবহার করুন।
    • বৈদ্যুতিক নিরাপত্তায় ইলেকট্রিক আইন ১৯১০ এবং ইলেকট্রিক রুলস ১৯৩৯ জানুন এবং মেনে চলুন।
    • বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধ কল্পে সঠিক এম্পায়ারের বিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
    • আবাসিক ভবন কিংবা বাণিজ্যিক ভবন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে এসএলডি (সিঙ্গেল লাইন ডায়াগ্রাম) অনুযায়ী বৈদ্যুতিক সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ কারণে ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ এবং দক্ষ বিদ্যুৎ প্রকৌশলীর সাহায্য নিন।
    • বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাণিজ্যিক ভবন বৈদ্যুতিক স্থাপনা থেকে নিরাপদ দূরত্বে নির্মাণ করুন।
    • ভবনের প্রতিটি সার্কিটকে উপযুক্ত ফিউজ ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ রাখতে হবে।
    • ভবনের সকল সুইচ বৈদ্যুতিক লাইনের ফেজের সাথে সঠিকভাবে সংযুক্ত থাকতে হবে।
    • সিঙ্গেল ফেজের জন্য দুই মেরু এবং ট্রিপল ফেজের জন্য চার মেরু বিশিষ্ট মেইন সুইচ ব্যবহার করতে হবে।
    • বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে সঠিকভাবে আর্থিং করা না থাকা। তাই বাসা বাড়ি অথবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত যেকোনো ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন টেলিভিশন, কম্পিউটার, ওভেন, ফ্রিজ, ইলেকট্রিক চুলা ইত্যাদি সঠিকভাবে আর্থিং করা নিশ্চিত করুন।
    • প্রধান সড়কে মেইন বৈদ্যুতিক লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে বাসা বাড়ি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে হবে।
    • রাস্তার ধারে গাছ লাগানোর সময় বৈদ্যুতিক লাইন অথবা বৈদ্যুতিক পিলার থেকে নিরাপদ দূরত্বে লাগাতে হবে। একই সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের চূড়া যেন কোনোভাবেই বৈদ্যুতিক লাইনের সাথে স্পর্শ না করে।
    • অনুমোদিত এবং দক্ষ ব্যক্তি ছাড়া যেকোনো বৈদ্যুতিক স্থাপনা কিংবা উচ্চ বৈদ্যুতিক ক্ষমতা সম্পন্ন ভবনের যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করা যাবে না।
    • রক্ষণাবেক্ষণ অথবা পরিদর্শন ছাড়া অন্য সময় উচ্চ বৈদ্যুতিক ক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ভবনের প্রবেশদ্বার অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে।
    • নবনির্মিত ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগ নেয়ার সময় অথবা যেকোনো বৈদ্যুতিক কাজ করার সময় নিশ্চিত হন যে লাইন এবং যন্ত্র সামগ্রীর বৈদ্যুতিক সংযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, প্রয়োজনে প্রতিটি ফেজ টেস্ট করা যেতে পারে।
    • বৈদ্যুতিক সুইচ অথবা সরঞ্জাম স্থাপন অথবা মেরামত এর সময় প্রতিটি কর্মীকে উপযুক্ত পোশাক পরিধান করতে হবে বিশেষ করে মাথায় হেলমেট, হাতে গ্লাভস, চোখে চশমা থাকতে হবে।
    • কোন অবস্থাতেই ভেজা হাতে বৈদ্যুতিক সুইচ কিংবা যেকোনো সরঞ্জাম স্পর্শ করা যাবে না।
    • উঁচু স্থানে কাজ করার সময় বহনযোগ্য মই ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে কোনো কর্মী কাজ করলে অন্য কর্মীদের উচিত সে মইটিকে ধরে রাখা যাতে কোনোভাবেই মই পিছলে কোন ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।
    • প্রতি দুই থেকে তিন বছর অন্তর ভবনের সকল সুইচ এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নিরীক্ষা করা উচিত। যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে ত্রুটিপূর্ণ সুইচ বা যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করতে হবে।

আগুন লেগে গেলে বাঁচার উপায়

অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রানাহানির ঘটনা ঘটলে তার জন্য দায়ী থাকে আগুনের শিখা বা ধোঁয়া। ধোঁয়া বা আগুনের শিখা বাতাস অপেক্ষা হালকা হওয়ায় এটি সবসময় উর্ধ্বমুখী থাকে। তাই আগুনের ভেতর থেকে নিরাপদ স্থানে দৌড়ে যাওয়ার সময় অবশ্যই বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে যে ফ্লোরে আগুন লাগে তার নিচের ফ্লোরে যেতে হবে, উপরের দিকের ফ্লোর গুলোতে নয়। 
অনেকে আতঙ্কিত হয়ে খোলা জায়গায় যাওয়ার জন্য ভবনের একদম ছাদে চলে যায় আর তখনই ঘটে বিপদ। ছাদের উপরে পুরো অংশটিতে ধোঁয়া ভর্তি থাকে ফল সেখানে অক্সিজেন কম থাকে ফলে শ্বাস-প্রসার জনিত সমস্যার কারণেই অনেকে মৃত্যুবরণ করে। আগুন লেগে গেলে দৌড়ে নয় বরং হামাগুড়ি দিয়ে আগুনের স্থান ত্যাগ করুন।
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় - অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায়

পরিশেষে
সচেতনতা সচেতনতা এবং সচেতনতা!!! অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় সচেতনতা। ফায়ার সার্ভিস এর গাড়ি যেন সহজেই ঢুকতে পারে এমন রাস্তা রেখে ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে ভবনের ভেতরে অগ্নি নির্বাপনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম নিশ্চিত করা পর্যন্ত সবকিছুই অত্যন্ত সচেতনতার সাথে করতে হবে যদি আমরা অগ্নিকাণ্ড রোধ করতে চাই।
যাইহোক, উপরে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করার উপায় অর্থাৎ অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলাম। আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে নতুন কোন টপিক নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। লেখায় কোন ভুল-ভ্রান্তি হলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url