যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন - জানুন ১৪টি ধাপ
আপনার কি ইউটিউবে একটি চ্যানেল রয়েছে? চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করতে চান কিন্তু বুঝতে পারছেন না প্রফেশনাল ভিডিও কিভাবে তৈরি করবেন? তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেল পড়ছেন। এ লেখা থেকে আজকে জানা যাবে যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন।
“অনলাইন ইনকাম” এর আজকের এই পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে ইনকামের পথ সুগম করবেন। তবে তার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন প্রফেশনাল ইউটিউব ভিডিও তৈরিতে কি কি জিনিস প্রয়োজন হয়। প্রফেশনালি ইউটিউব ভিডিও বানানোর বিস্তারিত জানতে হলে আজকে লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। .
যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন
ইউটিউব থেকে ইনকামের বিষয়টি আমরা মোটামুটি সবাই জানি। অনেকেই আছেন চাকরির পিছনে না ছুটে ঘরে বসে ইনকামের উদ্দেশ্যে ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করছেন। তবে এই সেক্টরটিতেও প্রত্যেকদিন প্রতিযোগিতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তাই শুধু ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করলেই রাতারাতি সফলতা পাওয়া সম্ভব নয়।
এর জন্য আমাদের কনটেন্ট অর্থাৎ ভিডিও কে হতে হবে প্রফেশনাল এবং উন্নত মানের। আপনার মনে যদি প্রশ্ন জেগে থাকে কিভাবে প্রফেশনালি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন, তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্য। যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন সেটি জানার জন্য আমাদের কিছু গুরুত্বপুর্ন ধাপ অনুসরন করতে হবে। যেমনঃ
- সঠিক পরিকল্পনা
- উপযুক্ত নিশ বাছাই
- স্ক্রিপ্ট
- প্রতিযোগীদের রিসার্চ
- ভিডিওর ধারণা
- কিওয়ার্ড রিসার্চ
- ভিডিও এডিটিং
- আকর্ষণীয় থাম্বনেইল
উপরের ধাপগুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সবগুলো ধাপ বিস্তারিত জেনে নেই।
উপযুক্ত নিশ বাছাই করুন
ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চাইলে অবশ্যই একটি উপযুক্ত নিশ (Niche) বা টপিক অথবা বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে ভিডিও তৈরি এবং আপলোড করে আপনাকে সামনে এগোতে হবে। যখন যেটা মনে হল সেই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করলেন আপলোড করলেন তাহলে আপনি বেশি দূর আগাতে পারবেন না।
আরও পড়ুনঃ ওআইসি (OIC) কেন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল
বিনোদনমূলক ভিডিও তৈরি করতে চাইলে বেশি চিন্তাভাবনার প্রয়োজন নেই যেকোনো ধরনের ভিডিও বানাতে পারেন। তবে শিক্ষামূলক বা তথ্যসমৃদ্ধ ভিডিও বানাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে একটি টপিক নির্বাচন করতে হবে।
এমন ধরনের নিশ নির্বাচন করতে হবে যাতে সেই বিষয়বস্তুর উপরে আপনি অসংখ্য ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং আপনার ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্য যেন দর্শকরা কাজে লাগাতে পারে। তাই টপিক নির্বাচনের আগে যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে দেখুন কোন বিষয়ে আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে এবং কোন বিষয়ে ভিডিও তৈরি করলে আপনার দর্শকদের যথেষ্ট তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন।
সঠিক পরিকল্পনা করুন
উপযুক্ত নিশ বা বিষয়বস্তু নির্বাচনের পরে আপনাকে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে হবে আপনি কোন বিষয়ের উপর ভিডিওটি তৈরি করবেন। আপনার দর্শকদের কিভাবে তথ্যগুলো উপস্থাপন করবেন আকর্ষণীয়ভাবে যাতে করে পুরো ভিডিওটি দর্শক আগ্রহের সাথে দেখতে থাকে। আর এর জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হবে অর্থাৎ ভিডিওতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যতগুলো কথা বলবেন একটি সাদা কাগজে তা লিখে ফেলুন।
স্ক্রিপ্ট লেখার সময় আপনি বুঝতে পারবেন কোন তথ্যটি আগে বা পরে দিলে ভালো হয়, সবগুলো তথ্য কিভাবে সাজানো যায়। খেয়াল রাখতে হবে যে বিষয়ের উপর ভিডিওটি তৈরি করবেন সেটি যেন আপনার ভিডিওর মধ্যে হাইলাইট করা থাকে। উদাহরণস্বরূপ আপনার নিশ হল টেকনোলজি এবং আপনি অ্যাপ রিভিউ এর উপরে ভিডিও তৈরি করতে চান।
তাহলে এই ভিডিওর মধ্যে আপনি যে অ্যাপ নিয়ে রিভিউ দিচ্ছেন সেটির উপকারিতা এবং অপকারিতা অবশ্যই থাকতে হবে তার সাথে অ্যাপটি কিভাবে কাজ করে, অ্যাপটি দর্শক কেন ব্যবহার করবে সেটা আপনাকে পরিষ্কার ভাবে জানাতে হবে। মাথায় রাখবেন যে অ্যাপটি নিয়ে ভিডিও তৈরি করছেন সেটি সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে এবং কোন রকমের ভুল তথ্য দেয়া যাবে না কারণ ভিডিও দেখার পরে আপনার এই রিভিউ থেকে অনেকেই কিন্তু অ্যাপ নিয়ে কাজ করতে চাইবে।
প্রতিযোগীদের রিসার্চ করুন
আপনি যে বিষয়ে ভিডিও তৈরি করতে চাচ্ছেন তৈরীর আগেই ইউটিউবে সেই বিষয়ের অন্যান্য প্রতিযোগী বা কম্পিটিটরদের ভিডিওগুলো দেখতে থাকুন। ভিডিও দেখার ফল আপনি বুঝতে পারবেন তাদের ভিডিওতে যে ঘাটতি গুলো রয়েছে সেই তথ্যগুলো আপনার ভিডিওতে আপনি সংযুক্ত করতে পারবেন। এছাড়াও কমপিটিটরদের ভিডিওর কমেন্ট গুলো পড়লে বুঝতে পারবেন ভিউয়ার্স কি ধরনের তথ্য আশা করছেন, আপনার ভিডিওতে আপনি সেরকম তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন।
স্ক্রিপ্ট লিখুন
স্ক্রিপ্টের কথা আগে বলা হলো তবে স্ক্রিপ তৈরির বিষয়ে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরী। স্ক্রিপ্ট তৈরির জন্য সহজ সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন যাতে দর্শকদের চিন্তাভাবনা করে বুঝতে না হয়। স্ক্রিপ্ট ছোট করুন কারণ স্ক্রিপ্ট বড় হলে ভিডিও বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে আর বড় ভিডিও দেখার ধৈর্য অনেক দর্শকেরই থাকে না।
দর্শকদের কাছে ভিডিও কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে আপনি বিভিন্ন সোর্সের কথা উল্লেখ করতে পারেন প্রয়োজনের সোর্স লিংকটাও দিয়ে দিতে পারেন। আর একটা কথা বিশেষ ভাবে মনে রাখতে হবে, স্ক্রিপ্টে বা ভিডিওতে অবশ্যই আঞ্চলিকতা পরিহার করুন, শুদ্ধ ভাষার ভিডিও দেখতে সকল দর্শকই পছন্দ করেন।
অপ্রয়োজনীয় কথা এড়িয়ে চলুন
অনেকেই মনে করেন ভিডিওর দৈর্ঘ্য যত বেশি হবে ওয়াচ টাইম তত বৃদ্ধি পাবে। এই জন্য তারা ভিডিওর শুরুতে অনেক অপ্রয়োজনীয় কথা বলে থাকেন যেটি সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। অল্প দৈর্ঘ্যের অধিক তথ্য সমৃদ্ধ ভিডিও দর্শক দেখতে বেশি পছন্দ করে।
তাই টপিক রিলেটেড কথাবাত্রা বলুন ভিডিওতে। টপিকের বাইরে কথাবার্তা বলা, ভিডিওর মাঝে মাঝেই সাবস্ক্রাইব করার কথা বলা এসব থেকে বিরত থাকুন। ভিডিওর মান যদি ভাল হয়, দর্শক দেখে যদি আকৃষ্ট হয় তবে অবশ্যই তারা আপনার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে থাকবে।
কাজের তালিকা তৈরি করুন
স্ক্রিপ্ট তৈরি করা হয়ে গেলেই সব কাজ হয়ে যায় না। আপনার পুরো ভিডিওতে কোথায় আপনার নিজের উপস্থাপনা থাকবে, কোথায় কোন এক্সটার্নাল সাউন্ড যোগ করবেন, কোন জায়গাটাতে প্রয়োজন মত কিছু ছবি সংযুক্ত করবেন, কোন জায়গায় হয়তো আলো কম বা বেশি থাকবে আকর্ষণীয় করার জন্য এসব কিছুর জন্য একটি তালিকা তৈরি করুন ভিডিওর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। তাহলে আপনি যেমন ভাবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন ভিডিওটি দর্শকদের সামনে ঠিক সেভাবেই ভিডিওটি তৈরি করতে পারবেন।
ভিডিওর ধারণা নির্বাচন করুন
আপনার সক্ষমতা অনুযায়ী ভিডিওর ধারণ নির্বাচন করুন অর্থাৎ আপনি যদি ভিডিও এডিটিং যথেষ্ট ভালো জানেন সে ক্ষেত্রে আপনি অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরি করতে পারেন। বর্তমানে অ্যানিমেশন ভিডিওর চাহিদা প্রচুর। আপনি টেকনোলজি বিষয়ে ততটা অভিজ্ঞ না হলে লাইভ ভিডিও করতে পারেন।
ক্যামেরার সামনে আসতে আপনার যদি জড়তা বা সংকচ থেকে থাকে তাহলে ফেসলেস ভিডিও বানিয়েও দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। কোন ধরনের ভিডিও আপনি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন এবং কোন ধরনের ভিডিও করলে দর্শকরা দেখবে এটি নিয়ে বিস্তর চিন্তাভাবনা করতে হবে।
নিজের প্রস্তুতি নিন
ক্যামেরার সামনে এসে ভিডিও তৈরি করতে চাইলে নিজেকে প্রস্তুত করা অত্যন্ত জরুরী। অনুশীলনের জন্য প্রথমে ক্যামেরা অফ রেখেই স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কথা বলতে থাকুন। খেয়াল করুন কোন জায়গায় আটকে যাচ্ছেন, কোন জায়গায় আরো ভালোভাবে বললে দর্শক আকৃষ্ট হবে। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে গেলে নার্ভাস লাগলে সেটাকে দূর করার উপায় আপনার নিজেকে বের করতে হবে। মনে রাখবেন কোন ধরনের জড়তা বা সংকোচ থাকলে ভিডিওর মান ভালো হবে না, দর্শক আকৃষ্ট হবে না।
কিওয়ার্ড রিসার্চ করুন
স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সঠিকভাবে ভিডিও ধারণ করার এবং এডিট করার পরে আপনাকে মনোযোগ দিতে হবে ভিডিওর একটি আকর্ষণীয় টাইটেল এর উপরে অর্থাৎ সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। উপযুক্ত, জনপ্রিয় এবং খুব বেশি সার্চ করা টাইটেল দিলে সহজেই আপনার ভিডিওর ভিউ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে জনপ্রিয় টপিক নিয়ে ভিডিও বানালে যেমন মোবাইল, অ্যাপ, গেম রিভিউ এসব বিষয়ে ভিডিও বানালে খুব সহজেই রিচ বাড়ে এবং সাবস্ক্রাইবারের সাথে সাথে ভিউজ বাড়তে থাকে।
রুম সেটাপ করুন
আপনার ইউটিউব চ্যানেল এবং ভিডিওর ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে চাইলে ভিডিও কোয়ালিটির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরী। দর্শকদের কাছে আপনার ভিডিও কে প্রফেশনালি উপস্থাপন করতে চাইলে আপনার ভিডিও সেটআপ করতে হবে প্রফেশনালি। ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ড, লাইট কন্ডিশন, সাউন্ড সিস্টেম খুব গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে।
নিজের রুমকেও ভিডিও করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন তবে খেয়াল রাখতে হবে ভিডিওর সময়ে আপনার রুমে যেন কেউ এসে বাধা সৃষ্টি না করে অথবা বাইরে থেকে কোন অতিরিক্ত শব্দ এসে আপনার ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি খারাপ করে না দেয়। লাইটের সেটআপ এমন ভাবে করবেন যেন আপনাকে এবং আপনার প্রোডাক্ট কে দেওয়া হয়।
ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ করুন
অনেক বড় বড় ইউটিউবারও ছোট ছোট ক্লিপ করে এটি পূর্ণ ভিডিও তৈরি করে থাকেন। ধরুন স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী আপনার ভিডিওতে যে কয়টি পয়েন্ট এর উপরে আপনি আলোচনা করবেন সে কয়েকটি পয়েন্টের আলাদা আলাদা ভাবে ভিডিও শুট করে নিবেন। এরপর সব কয়টি ক্লিপ একসাথে জুড়ে দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ভিডিও করে ফেলতে পারেন। একটানা সম্পূর্ণ ভিডিও রেকর্ড না করে এভাবে ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ করলে আপনার ভিডিও বানানোর অনেক সহজ হতে পারে।
ভিডিও এডিটিং এর প্রতি নজর দিন
স্ক্রিপ্ট, আপনার উপস্থাপনা, লাইট, ভয়েস সেটআপ সবকিছুই ভালো মতো হলো কিন্তু ভিডিও এডিটিং যদি আনাড়ির মত হয় তাহলে “তীরে এসে তরী ডোবার মত অবস্থা” হবে। ভিডিও তে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যানিমেশন সহ বিভিন্ন ভিডিও ইফেক্টস দিতে হবে যাতে আপনার ভিডিওতে তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি ভিডিওর মান দেখেও দর্শক স্বাচ্ছন্দ বোধ করে এবং আকৃষ্ট হয়।
সবচেয়ে ভালো হয় আপনি ভিডিও এডিটিং এর একটি কোর্স করে নিতে পারেন। আর আপনি নিজে না পারলে কোন দক্ষ এডিটিং এক্সপার্ট কে দিয়ে আপনার ভিডিওটা এডিট করিয়ে নিতে পারেন। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ভিডিও এডিটিং করার জন্য উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে রয়েছে-
ফ্রি সফটওয়্যার: এই সফটওয়্যার গুলো ফ্রিতে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।
- Hitfilm Express
- ShotCut
- OpenShot
- ClipChamp
Paid software: এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে আপনাকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
- Filmora
- DaVinci Resolve
- Adobe Premiere Pro
- Cyberlink Power Director
- KineMaster
মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিট করতে চাইলে উল্লেখযোগ্য apps গুলোর মধ্যে রয়েছে-
- Filmora
- Power Director
- KineMaster
- Capcut
- InShot
তবে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিট করার ক্ষেত্রে বেশকিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পেতে চেষ্টা করুন কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপে ভিডিও এডিট করতে।
আকর্ষণীয় থাম্বনেইল সেট করুন
একটি আকর্ষণীয় এবং সফল ভিডিও তৈরীর ক্ষেত্রে সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হল ভিডিওর জন্য আকর্ষণীয় থাম্বনেইল (Thumbnail) সেট করা। ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোডের পরে টাইটেল এর আগে ভিডিওর ওপরে থাম্বনেইল স্পষ্ট ভাবে দর্শকদের চোখে পড়ে।
অর্থাৎ আপনার ভিডিওটি ভিউয়ার্স দেখবে কি দেখবে না অনেকটাই নির্ভর করে আপনার ভিডিওর টাইটেল এবং থাম্বনেইলের উপরে। থাম্বনেল বানানো অবশ্যই শিখে নিতে হবে অথবা দক্ষ কারো কাছ থেকে করিয়ে নিতে হবে। YouTube থাম্বনেইল বানানোর জন্য সেরা এপস গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -
- Pixlr
- PixStudio
- Canva
- Fotor
ভিডিও আপলোডের পূর্ব প্রস্তুতি
আপনার তৈরি করা ভিডিওর জন্য আকর্ষণীয় টাইটেল এবং থাম্বনেইল এর পাশাপাশি আপলোডের পূর্বে ভিডিওর ট্যাগ, ক্যাটাগরি এবং ডেসক্রিপশন বিশেষভাবে সংযুক্ত করুন। এ প্রত্যেকটি ব্যাপারই আপনার ভিডিওকে দর্শকদের কাছে তুলে ধরতে সাহায্য করবে। একই বিষয়ে একাধিক ভিডিও থাকলে ইউটিউবে আপলোডের সময় প্লে লিস্ট তৈরি করুন তাহলে দর্শকরা সবগুলো ভিডিও দেখার সুযোগ পাবে।
প্রফেশনাল ইউটিউব ভিডিও তৈরিতে কি কি লাগে?
আগেই বলা হলো YouTube এর মূল উপাদান হচ্ছে ভিডিও। আর এই ভিডিওর কোয়ালিটি এবং মান যত ভালো হবে আপনার ইনকামের মাত্রা ততই বাড়তে থাকবে। উপরে এতক্ষণ প্রফেশনাল ভিডিও তৈরি করার ১৪ টি ধাপ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তবে প্রফেশনাল ভিডিও বানাতে কি কি জিনিসপত্র প্রয়োজন সেগুলো আমাদের জানা অবশ্যই জরুরী। তাই সঠিক ভাবে আকর্ষণীয় ভিডিও বানাতে ফুল সেটআপের প্রয়োজনে যা যা লাগবে তা হল-
- অবশ্যই একটি ভাল মানের ক্যামেরা থাকতে হবে। DSLR ক্যামেরা হলে খুবই ভালো তবে YouTube থেকে ইনকামের প্রাথমিক পর্যায়ে এত টাকা খরচ করে ক্যামেরা কেনার প্রয়োজন নেই। চেষ্টা করবেন যেসব মোবাইলের ক্যামেরা তুলনামূলকভাবে ভালো সেগুলো ব্যবহার করতে। এখানে স্বচ্ছ এবং চকচকে ভিডিও পাওয়া যাবে এটা আশা করা যায়।
- মোবাইল ফোনে স্টাবিলাইজেশন এর সুবিধা থাক বা না থাক স্থির কোয়ালিটির ভিডিওর জন্য অবশ্যই ট্রাইপড বা মোবাইল স্ট্যান্ড ব্যবহার করবেন।
- আপনার ভিডিওতে কোন রকমের কোলাহল বা বাইরের কোন শব্দ যেন না থাকে সেজন্য একটি কোলাহলমুক্ত ঘর বা স্টুডিও সেটআপ দিবেন। অবশ্য বর্তমানে বাইরে থেকে আসা কোন শব্দকে প্রতিহত করতে সাউন্ডপ্রুফ সিস্টেম ব্যবহার করা যায়।
- একটি আকর্ষণীয় ভিডিওর ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এর সাউন্ড বা শব্দ। ভিডিওতে ইন্টার্নাল শব্দ যেমন কোন মিউজিক অথবা এক্সটার্নাল শব্দ যেমন আপনার ভয়েস যেটাই হোক না কেন সেটা হতে হবে স্পষ্ট বা ক্লিয়ার সাউন্ড। আপনার ভয়েস দেবার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি উন্নত মানের মাইক্রোফোন ব্যবহার করুন।
- রেকর্ড করা ভিডিও এডিট করার জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কনফিগারেশন ভালো হতে হবে। একটি শক্তিশালী প্রসেসরের সাথে কমপক্ষে ৬ জিবি রেম থাকা প্রয়োজন। তাহলে এডিট করার জন্য যে সফটওয়্যার বা এপ্লিকেশন (মোবাইলের ক্ষেত্রে) গুলো ব্যবহার করবেন তা ভালোমতো কাজ করবে।
শেষ কথা
বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় প্লাটফর্ম ইউটিউবে কোটি কোটি ভিডিও রয়েছে। ধরে নিন আপনি যে বিষয়ে ভিডিও করেছেন সেই বিষয়ে হাজার হাজার ভিডিও রয়েছে। তাহলে এতগুলো ভিডিওর মাঝে থেকে আপনার ভিডিও দর্শক কেন দেখবে? এই প্রশ্ন মাথায় নিয়ে এবং এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে যদি ভিডিওটি তৈরি করতে পারেন তবে আপনি সফল।
তাই আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিবর্তে ভিডিওর কোয়ালিটি বা মান উন্নয়নের চেষ্টা করুন সর্বদা। ভিডিও তৈরীর বিষয়ে যা আলোচনা করা হলো আজকে তা মূলত নতুন ইউটিউবারদের জন্য, অভিজ্ঞ ইউটিউবারদের জন্য নয়।
যাইহোক, উপরের আলোচনা থেকে জানতে পারলেন যেভাবে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করবেন আপনারা। আপনাদের সব ধরনের মঙ্গল কামনা করে আজকে এখানেই শেষ করছি। সামনের দিন নতুন কোন বিষয় নিয়ে হয়তো আপনাদের সাথে আবারো যোগাযোগ হবে এই ওয়েবসাইটে লেখার মাধ্যমে। ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন আর ভুল ত্রুটি হলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url