শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা
প্রত্যেক মা-বাবা তাদের সন্তানকে সুনাগরিক হিসেবে বড় করতে চান। তবে এর জন্য সন্তানের শারীরিক সুস্থতা এবং সঠিক মানসিক বিকাশ অপরিহার্য। তবে বর্তমানে বাবা-মা উভয়েই কর্মব্যস্ততার কারণেই হয়তো সন্তানের মানসিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারেন না। শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়েই আজকে আলোচনা করা হবে।
"পরিবার" এর আজকের পর্বে শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করব। আজকের এই আলোচনা ০২ থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুদের উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে। আশা করি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা
পরিমিত সুষম খাবার না খেলে যেমন শিশুর স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে না ঠিক তেমনি উপযুক্ত পরিবেশ এবং শিষ্টাচার চর্চা না পেলে শিশুর মানসিক বিকাশও ব্যাহত হয়। শিশুকাল অনেকটাই কাদা মাটির মত যেভাবে বাবা-মা চাইবে সন্তান সেভাবেই বেড়ে উঠবে। একটি শিশু তার শিশুকালে যা শিখে পরবর্তী পুরো জীবনে সেটারই প্রতিফলন ঘটায়।
সামাজিক এবং নৈতিক শিক্ষাগুলো একটি শিশু পরিবার অর্থাৎ বাবা-মার কাছে থেকেই শিখে থাকে। বাবা মা হিসেবে শিশুর সঠিক বিকাশে কোন কাজগুলো করা উচিত আর কোন কাজ গুলো করা উচিত নয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তাই শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা অপরিসীম। শিশুর সঠিক মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে যে কাজগুলো অবশ্যই বাবা-মা হিসেবে করা উচিত সেই বিষয়ে আমরা আজকের লেখায় জানার চেষ্টা করব। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে বিষয়গুলো জেনে নেই।
সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিন
সন্তানকে যথেষ্ট সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন। বর্তমান সময়ে বাবা-মা দুজনে চাকরি করায় সন্তানদের সারাটা দিন একা একা থাকতে হয়। অফিস থেকে ফিরে চেষ্টা করবেন সর্বোচ্চ সময় দেয়ার। সন্তানকে নিয়ে গল্প করা, একসাথে খাওয়া, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, বাচ্চার পড়া লেখার সময় সাথে থাকা, একসাথে টিভি দেখা, বাচ্চার সাথে কার্টুন দেখা ইত্যাদি কাজগুলো করলে বাচ্চা মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে। সারাদিন একা থাকার পরেও যদি তাকে তার সব কাজে একা একাই করতে হয় সে আসলে হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করবে এক সময়। রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সন্তানকে সময় দিন।
উপযুক্ত খেলনা দিন
আপনার শিশুকে বয়স অনুযায়ী খেলনা দিন। ধরুন আপনার বাচ্চার বয়স দেড় বছর। এই সময় যদি তাকে কোন ব্রেন গেম যেমন কিউবে এর মতো কোনো খেলনা দেন তাহলে তার গুরুত্ব সে বুঝবে না তবে রঙিন খেলনা হিসেবে হয়তো সে খেলবে। আবার মনে করেন আপনি তাকে ছড়ার বই বা ডিজিটাল স্লেট দিলেন। ছড়ার বই হয়তো তার একটু ভালো লাগতে পারে কারণ বিভিন্ন ছবি থাকবে তাতে।
আবার ডিজিটাল স্লেটে সে বিভিন্ন আঁচড় কাটতে পারবে এটাও হয়তো তার ভালো লাগবে। কিন্তু সমস্যা হবে যখন সে চার পাঁচ বছরে লেখা পড়া শিখতে যাবে তখন এই উপকরণগুলো তার কাছে আর ভালো লাগবে না কারণ সে ছোটবেলা থেকে এই উপকরণগুলো নিয়ে খেলে এসেছে। এ বয়সের জন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের খেলনা জীবজন্তু দিতে পারেন। এতে করে সে জীবজন্তুর সাথে পরিচিত হতে পারবে। তাই বয়সল অনুযায়ী, বয়সের জন্য প্রয়োজনীয় খেলনা আপনার সন্তানকে দিন।
বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন
বই পড়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান অভ্যাস। বর্তমান সময়ের ডিজিটাল যুগে বই পড়ার অভ্যাস প্রায় বিলুপ্ত। অথচ আমাদের পূর্বপুরুষ গন যারা অনেক বিখ্যাত হয়েছেন তারা কিন্তু বই পড়ার মাধ্যমে অনেক জ্ঞান অর্জন করেছেন। তাছাড়া বই পড়লে এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। এজন্যই বলা হয় বই মানুষের পরম বন্ধু।
কিন্তু এখনকার ডিজিটাল যুগে এই জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা বইয়ের দিকে একদমই যেতে চায় না তারা শুধু বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এ আসক্ত থাকে। এটা অনেকটা নেশার মত। অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ফলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সাথে সাথে মানসিকভাবেও মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে বাচ্চাদের।
তাই অভিভাবক হিসেবে বাবা মায়েদের আগে উচিত বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করা এবং তাদের সামনে নিয়মিত বই পড়লে বাচ্চারাও বই পড়তে উদ্বুদ্ধ হবে বাবা-মার দেখা দেখি।
সন্তানকে মিশুক বানানোর চেষ্টা করুন
আমাদের সময়ে আমরা বাইরে খোলা মাঠে খেলেছি। শহরে থাকলেও একই ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে যারা বসবাস করতাম তারা একসাথে খেলাধুলা করতাম। অনেক খেলার মাঠ ছিল, খেলার পরিবেশ ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাইরে খেলার জন্য মাঠ নাই, খেলার উপযুক্ত পরিবেশও নাই।
আবার আমরা এমন এক যান্ত্রিক জীবন কাটাই যেখানে একই ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটের মানুষদের সাথে মেলামেশা তো দূরের কথা কে থাকে, তার কোন সমস্যা হলো কিনা আমরা সেই খোজ টুকু রাখারও সময় পাইনা। আবার ব্যস্ততার কারণে আত্মীয়-স্বজনেরা আমাদের বাসায় যেমন খুব একটা আসে না আমরাও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় যেতে পারি না।
কাজে আমাদের ছেলেমেয়েরা সেই ভাবে মানুষের সাথে মিশতে পারে না। কিন্তু না মেশার ফলে বাচ্চাদের ভেতর জড়তা থেকে যায় তারা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ছাত্র জীবনে ও কর্মজীবনে গিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই বাবা-মা হিসেবে খেয়াল রাখা উচিত যতটা সম্ভব আপনার সন্তানদের সমবয়সী বা অন্য বাচ্চাদের সাথে মেলামেশা করার সুযোগ করে দেয়া।
যে কোন সৃজনশীল কাজে আগ্রহী করে তুলুন
পুরা দুনিয়ায় যত বড় বড় বিজ্ঞানী রয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই ছোট থেকেই সৃজনশীলতা ছিল। নতুন কিছু তৈরি করবে, নতুন কিছু সৃষ্টি করবে এই প্রতিভা তাদের ছিল। আমাদের সন্তানদেরও সব সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যস্ত না রেখে বরং বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে জড়িত করা যেতে পারে।
যেমন গাছপালা ফলমূল প্রকৃতির ছবি আঁকতে বলা যেতে পারে, বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে ঘরবাড়ি বাড়ানোর চেষ্টা করবে, বিভিন্ন ফুলের গাছ টবে লাগিয়ে পরিচর্যা করবে। বিজ্ঞানের ছোট ছোট মজার উদ্ভাবনী ঘটনাগুলো তারা পড়ার পরে সেগুলোর ব্যবহারিক প্রয়োগ করতে পারে। যেমন দুটো পেন্সিল ব্যাটারির মাধ্যমে ছোট্ট বাল্ব কিভাবে জ্বালানো যায় ইত্যাদি।
শরীর চর্চা বা খেলাধুলা করান
আমাদের বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে কর্মব্যস্তময় জীবনে শরীর সুস্থ এবং ফিট রাখতে শরীরচর্চা বা খেলাধুলার বিকল্প কিছুই নেই। কারণ আমাদের কাইক পরিশ্রম হয় খুব কম। আমরা বেশিরভাগ সময় ছাত্ররা বসে পড়াশোনা করি আর যারা চাকরি করি তারা অফিসে বসে কাজ করি। সে ক্ষেত্রে আমাদের শরীর ফিট রাখতে অবশ্যই শরীর চর্চা বা খেলাধুলা করতে হবে।
আর বাবা-মা হিসেবে আমরা যদি এই অভ্যাসটা করতে পারি তবে আমাদের দেখা দেখি আমাদের সন্তানরাও শরীরচর্চায় আগ্রহী হবে। শরীরচর্চা মানেই যে কোন জিমে গিয়ে প্রতিদিন দুই তিন ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হবে বিষয়টি এরকম নয়। বাসার ভেতরে প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়াম করলেই চলবে।
আর বাচ্চাদের জন্য ছোটবেলা থেকেই শরীরচর্চা অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে পরবর্তীতে তারা শরীরচর্চা বা খেলাধুলার অভ্যাস বজায় রাখতে পারবে এবং শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি তাদের মানসিক দিক দিয়েও সুস্থ্য থাকবে।
বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান
যেসব বাবা-মা দুইজনেই চাকরি করেন তারা ব্যস্ততার কারণে সন্তানদের বাইরে নিয়ে যেতে পারেন না। আবার মা গৃহিণী হলেও সারাদিন বাসার কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং বাবা অফিস থেকে এসে সন্তানদের সময় সেভাবে দিতে পারেন না। তাই উভয় ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটিকে সন্তানদের জন্য বরাদ্দ করুন।
বিনোদন, হাসিখুশি জীবন সন্তানদের মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাইরে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যেতে পারেন, বিভিন্ন লাইব্রেরীতে নিয়ে যেতে পারেন, পার্কে নিয়ে যেতে পারেন। তাছাড়াও বিভিন্ন নার্সারি বা হটিকালচারে নিয়ে যেতে পারেন সেখানে বিভিন্ন গাছপালা সম্পর্কে জানতে পারবে।
সন্তানকে দায়িত্বশীল করতে সংসারের কাজ করতে দিন
আপনার সন্তানকে যদি আপনি চান ছোটবেলা থেকে সে দায়িত্বশীল হয়ে উঠুক, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠুক তবে শিশুকাল থেকেই তাকে সংসারের কাজে সংযুক্ত করুন। অবশ্যই এক্ষেত্রে সহজ কাজগুলো শিশুকে দিতে হবে।
যেমন ধরুন আপনি পানি খাবেন আপনার গ্লাসটা এনে দিতে বললেন, আপনি হয়তো বারান্দায় বসবেন আপনার সন্তানকে প্লাস্টিকের টুল নিয়ে আসতে বললেন, বাসার কোন সদস্যকে ডাকতে বললেন ইত্যাদি।
অভাব বুঝতে দিন
চাওয়া মাত্র কিছু পেয়ে গেলে সেই জিনিসের কদর পৃথিবীর কোন মানুষই বুঝতে চায় না। কিন্তু সেই একই জিনিস যখন কষ্ট করে অর্জন করতে হয় বা ধৈর্য ধরে অনেক সময় পর পাওয়া যায় তখন সেই জিনিসের গুরুত্ব থাকে অনেক। তাই প্রচুর ধনসম্পদ থাকার পরেও বাবা মায়েদের উচিত সন্তান যখন যা চায় সাথে সাথে না দিয়ে দেওয়া। চাওয়ার সাথে সাথে পেয়ে গেলে সে সন্তানের মধ্যে নীতি নৈতিকতার প্রভাব বিস্তার করে না। তাই সন্তানকে অভাব বুঝতে দিন এতে করে তার মধ্যে ধৈর্যশীলতার চর্চা হবে।
প্রতিশ্রুতি পূরণ করার চেষ্টা করুন
বাচ্চাকে শান্ত করতে অনেক সময় বাচ্চাদেরকে বিভিন্ন রকম কথা দিতে হয়। মনে করুন আপনার সন্তান ভাত খেতে চাইছে না রাতের বেলা। আপনি তাকে কথা দিলেন সে যদি পেট ভরে ভাত খায় তাহলে সকালে উঠে তাকে একটা চকলেট দিবেন।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে যদি সে ভুলে যায় তাহলে তো ভুলে গেল আর যদি মনে রেখে আপনাকে বলে চকলেট দেয়ার কথা তাহলে অবশ্যই আপনাকে দিতে হবে। এতে করে সে ছোট থেকে বুঝতে পারবে যে কাউকে কথা দিলে কথা রাখতে হয়। প্রতিশ্রুতি রাখার গুরুত্বটা সে অনুধাবন করতে পারবে। আর যদি বাবা-মা হিসেবে আপনারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করেন তবে আপনাদের সন্তানও প্রতিশ্রুতি রাখতে শিখবে না।
শিশুদের চিন্তাভাবনাকে গুরুত্ব দিন
শিশুরা অনেক কল্পনা প্রিয় হয়। তারা ঘুমিয়ে যেমন স্বপ্ন দেখে জেগে থেকেও তারা বিভিন্ন রকম স্বপ্ন দেখে, কল্পনা করতে ভালোবাসে। এই কল্পনার জন্যই তাদের অনেক কিছু করার ইচ্ছা জাগে। তারা কল্পনা করে অনেক কিছু কাজ করার কথা বলে, অনেক গল্প বলে, অনেক ঘটনা বলতে চাই।
অবশ্যই পড়ুনঃ Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে
বাবা-মা হিসেবে আপনাদের অবশ্যই তার কথাগুলো, তার চিন্তা ভাবনা গুলোকে মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত এবং তার এই চিন্তা ভাবনা গুলোকে প্রশংসা করা উচিৎ। এর ফলে বাচ্চার চিন্তা করতে শিখবে তাদের চিন্তার পরিধিটা আরো বাড়বে।
শিশুর ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করুন
ধরুন আপনার সন্তান বাইরে যাওয়ার জন্য জেদ শুরু করেছে। আপনি আপনার সন্তানের ইচ্ছা কে গুরুত্ব দিয়ে বাইরে নিয়ে যান। বেশি দূরে নিয়ে যেতে হবে এমন কোন কথা নেই, বাড়ির সামনের রাস্তাটাই একটু হাটুন, কুকুর বিড়াল কিছু দেখতে পেলে দেখবেন তার মন এমনিতেই অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ভালো হয়ে গেছে। এছাড়া বাইরে ঘুরতে নিয়ে গেলে বাচ্চাদের মন যেমন ভালো থাকে তেমনি তাদের মেজাজ খিটখিটে অনেক কমে আসে।
ভুল করার মাধ্যমে শিখতে দিন
মাঝে মাঝে শিশুদেরও ছোটখাটো কিছু ভুল করতে দিতে হয় এতে করে তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে যা শিখবে সারা জীবনের জন্য সেটা তাদের অন্তরে গেঁথে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এ ভুলগুলো যেন তাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ না হয়। যেমন ধরুন আপনার বাচ্চা পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জেদ করল সে পুকুরের পানিতে নামবে।
অবশ্যই পড়ুনঃ হজ পালনে যাবার আগে ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন কি?
বাচ্চারা সাধারণত পানিতে খেলতে পছন্দ করে। অবশ্যই পুকুরের পানিতে নামা তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আবার মনে করুন মোমবাতি জ্বলছে, সে আগুনটা ধরতে চাইছে। আপনি যত নিষেধ করেন সে আরো জেদ করবে। এক্ষেত্রে তাকে নিষেধ না করে আগুনটা ধরতে দিবেন। সে আগুনটা ধরতে যেয়ে যখন ব্যথা পাবে তখন বুঝতে পারবে যে আগুন কোন খেলার জিনিস নয়। পরবর্তীতে সে আর কখনোই আগুনে হাত দিতে চাইবে না।
ভালো কাজে উৎসাহ দিন মন্দ কাজে চুপ থাকুন
বাচ্চাদের দুটি খুব সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা বড়দের অনুকরণ করে এবং আরেকটি হচ্ছে বাচ্চাদেরকে যেটা করতে নিষেধ করা হবে সে কাজটি তারা বেশি করে করবে। ধরুন আপনি আপনার ছোট বোনকে তুই করে সম্বোধন করে কথা বলেন। আপনার তিন বছরের শিশুও সেটা শোনার পরে সেও আপনার বোনকে তুই করে বলা শুরু করল।
এখন আপনি যখন নিষেধ করবেন যে বাবা তোমার ফুপিকে/খালাকে তুই করে বলতে হয় না তখন দেখবেন সে আরো বেশি করে বলবে। এ ধরনের সমস্যার সহজ সমাধান হলো আপনার সন্তান যখন কোন অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলে ফেলবে বা কাজ করবে সে সময়ে তার সে কাজের ব্যাপারে কোন মন্তব্য না করা।
ধীরে ধীরে সে কাজটি বা সে কথাটি সে বাদ দিয়ে দেবে। একইভাবে ভালো কিছু যখন বলবে বা করবে তাকে বেশি বেশি প্রশংসা করে উৎসাহ দিবেন যেন সে ভালো কাজটি করার জন্য আগ্রহী হয়।
উপসংহার
সন্তান যেহেতু নিজের তাই বাবা-মাকে উদ্যোগ নিতে হবে শিশুর মানসিক বিকাশ যেন সঠিকভাবে হয়। এখানে যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো হয়তো অনেক অভিভাবকেরই জানা। বাবা-মা হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমাদের সন্তানের স্বাস্থ্যের দিকে নজরদারির পাশাপাশি আমাদের মানসিক উন্নয়নের দিকেও নজর দেওয়া।
অবশ্যই পড়ুনঃ কাঁচা গাজর খাওয়ার উপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক
যাইহোক, শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবার ভূমিকা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলাম। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। লেখাটি ভালো লেগে থাকলে পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। উপরের বিষয়গুলো ছাড়া আরও যদি কোন বিষয়ে আপনাদের জানা থাকে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। এরকম তথ্যবহুল লেখা পড়তে নিয়মিত Mubin Pedia ভিজিট করার অনুরোধ থাকলো। ধন্যবাদ।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url