অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়

আপনি স্টুডেন্ট, গৃহিণী অথবা ছোটখাটো চাকরিজীবী যেই হোন না কেন ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করতে চান? কিন্তু অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায় সেই উপায়গুলো খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়

অনলাইন ইনকাম” এর আজকের এই পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়। ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম এর উপায় গুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। 

অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়

প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে মানুষের জীবনের চাহিদাও বেড়েছে অনেক। আর এ চাহিদা পূরণ করতে প্রয়োজন অনেক অর্থ। তাই অর্থ উপার্জন করার জন্য মানুষ প্রযুক্তিকেই বেছে নিয়েছে ফলে সৃষ্টি হয়েছে অনলাইনে ইনকামের অনেক সুযোগ। চাকরির পাশাপাশি স্টুডেন্ট গৃহীনিরাও ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করতে পারছেন এখন। আপনাদের জন্য আমাদের আজকের আয়োজন অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নেই। 

ওয়েবসাইট তৈরী এবং বিক্রি করে ইনকাম

বর্তমান সময়ে ঘরে বসে ইনকামের অন্যতম একটি উপায় হল ওয়েবসাইট তৈরি করে বিক্রি করা। ওয়েবসাইট তৈরির জন্য বিভিন্ন উপকরণ যেমন ডোমেইন, হোস্টিং, কাস্টমাইজেশনের জন্য বিভিন্ন রকম থিম ইত্যাদি সব অনলাইনেই পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটগুলো দুই রকম ভাবে বিক্রি করতে পারবেন। 
একরকম ভাবে ওয়েবসাইট তৈরি হওয়া মাত্রই গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা যায় আবার ওয়েবসাইট তৈরি করে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকামের ব্যবস্থা চালু করে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা যায়। তবে গুগল এডসেন্স যুক্ত ওয়েবসাইটের দাম বেশি হয় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজারের আশেপাশে। অন্যদিকে Google এডসেন্স ছাড়া ওয়েবসাইটের দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার আশেপাশে। 

তবে ওয়েবসাইটের ধরন, মান, নিশ ইত্যাদি বিবেচনায় দামের তারতম্য আরো বেশি হতে পারে। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ওয়েবসাইট তৈরির উপকরণ কেনা এবং তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

কনটেন্ট রাইটিং করে অর্থ উপার্জন

ঘরে বসে অর্থাৎ অনলাইনে ইনকামের বোধহয় সবচেয়ে সহজ উপায় হলো কন্টেন রাইটিং করে আয়। এখানে অল্প একটু পরিশ্রম আর মেধার প্রয়োজন। আপনি যদি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন এবং সৃজনশীল ব্যক্তি হয়ে থাকেন তবে অনলাইনে ইনকামের জন্য এই মাধ্যমটি আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। 

বিভিন্ন সাইটে মালিকদের এবং গ্রাহকদের চাহিদা মত আর্টিকেল লিখতে পারেন। বর্তমানে বহু অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলোতে আপনার লেখা বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। নির্দিষ্ট নিশ অনুযায়ী লেখা চর্চা করলে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি লেখার মান উন্নয়নের কারণে আপনার আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

ব্লগিং করে আয় করুন

এটিও হচ্ছে লেখালেখি সম্পর্কিত আয়ের একটি উৎস। লেখালেখি যদি ভালবাসেন তাহলে কনটেন্ট রাইটিং এর মত ব্লগিংও হতে পারে আপনার আয়ের একটি মাধ্যম। ব্লগিংয়ে মূলত নিজের সাইটের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করা হয়। ব্লগিংয়ের জন্য সাইট দুইভাবে তৈরি করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস এর মত কিছু প্ল্যাটফর্মে সাধারণত বিনামূল্যেই ব্লগিং সাইট তৈরি করে লেখালেখি করতে পারবেন। 
অন্যভাবে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে সম্পূর্ণ নিজের মালিকানাধীন ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে। তবে সম্পূর্ণ নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং করাই উত্তম কারণ এখানে অনেক সুযোগ সুবিধা থাকে। বিভিন্ন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখে, বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে, বিভিন্ন পণ্যের পর্যালোচনা করে প্রভৃতি উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ব্লগিং এর মাধ্যমে। 

তবে একটি বিষয় গুরুত্বের সাথে মনে রাখতে হবে, ব্লগিং যেহেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানাধীন কাজ তাই এখানে ইনকাম আসতে যথেষ্ট সময় লাগবে এবং এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য এবং পরিশ্রম।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয়

সহজ কথায় বললে অন্যের প্রোডাক্ট আপনি মার্কেটিং বা প্রচারণা করে বিক্রি করে দিলে সেটাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এক্ষেত্রে প্রোডাক্টের মালিক যেমন প্রোডাক্ট বিক্রি করে লাভ পান ঠিক তেমনি তার কিছু পার্সেন্টেজ আপনিও পাবেন কারণ আপনি তার প্রোডাক্ট বিক্রিতে সাহায্য করেছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় নিজের একটি ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ একাউন্ট থাকলে। 

একটি চলমান ওয়েবসাইট বা ব্লগে কোন প্রতিষ্ঠানের লিংক সংযুক্ত করার ফলে দর্শক যদি সেই লিংকে ক্লিক করে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট কিনে থাকেন তখন সে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আপনারও ইনকাম শুরু হবে। তবে নিজের ওয়েবসাইট না থাকলেও বা ওয়েবসাইট নিতে না চাইলে বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলো থেকেও আপনি ইনকাম শুরু করতে পারেন যেমন Shopify, AvanGate, eBay, Awin, Amazon ইত্যাদি।
অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়

গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে ইনকাম

গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ যদি ভালোমতো জেনে থাকেন তবে ঘরে বসেই এ প্লাটফর্ম থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে এই কাজের প্রচুর জায়গায় রয়েছে এখনো। গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষ হলে অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনার তৈরি করা নকশা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। 
আপনার দক্ষতা এবং কাজের মান অনুযায়ী একটি কাজ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন। তবে এই ধরনের উপার্জন করতে চাইলে আপনাকে শুধু দক্ষ হলে হবে না তুখোড় হতে হবে আর এর জন্য প্রচুর সময়, ধৈর্য, মেধা, এবং পরিশ্রম প্রয়োজন।

অনুবাদ করে আয় করুন

এই ধরনের আয়ের জন্য ভাষা জ্ঞান অত্যন্ত জরুরি। ইংরেজির পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ভাষা জানা থাকলে অনুবাদ করে আয় উপার্জন খুব সহজ। দেশে কিংবা বিদেশে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সময়ের অভাবে অনুবাদ করতে পারে না বিধায় অর্থের বিনিময়ে কাউকে দিয়ে অনুবাদ করিয়ে নেন। 

ইংরেজি সহ জার্মানি, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, আরবি ভাষায় আর্টিকেল বা ডকুমেন্ট অনুবাদ করতে অথবা এসব ভাষা থেকে বাংলা বা ইংলিশে অনুবাদে দক্ষ হলে মাসে ভালো আয় করতে পারবেন। বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এই ধরনের কাজ প্রচুর রয়েছে আপনাকে শুধুমাত্র কাজটি খুঁজে নিতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ইনকাম করুন

সোশ্যাল মিডিয়া অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এইসব মাধ্যমগুলো এখন আর শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই হয়ে উঠেছে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র। চাইলে এগুলো থেকেও এখন ঘরে বসে ইনকাম করা সম্ভব। ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করে আপনার পণ্যের প্রচারণা চালিয়ে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

এখানেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা থাকছে। তাছাড়াও বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের ভালো মানের অর্থ দেওয়া হয় তাদের পণ্যের প্রচারণা চালানোর জন্য। আপনার পারফর্মেন্স অনুযায়ী অর্থ উপার্জন বাড়তে পারে। পোস্ট তৈরি করে facebook, youtube এ ভিডিও আকারে সেগুলো প্রচার করে পণ্যের বিক্রি বাড়াতে পারলে হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্ট পাওয়া সম্ভব। 
সব সময় যে পণ্যের প্রচার করতে হবে বিষয়টি সেরকম নয় যারা লেখালেখি পছন্দ করেন না তারা ভিডিও তৈরি করেও বিভিন্ন তথ্য দর্শকদের জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে যে ধরনের তথ্য ভিউয়াররা জানতে আগ্রহী সেই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

তবে দর্শক এবং ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ কিছু কৌশল, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থাকা অত্যাবশ্যকীয়। তাই facebook, youtube, instagram পণ্যের প্রচার, সেবা প্রদান অথবা তথ্য জানানোর জন্য ভিডিও আপলোড করে অর্থ উপার্জন একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনলাইন শিক্ষকতা করে আয় করুন

শিক্ষকতা পেশাতে এখন আর স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, অন্যান্য ব্যবসার মাত্র এখন অনলাইনেও এটির বিস্তার লাভ করেছে। যেকোনো বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য আপনার দক্ষতা এবং যথেষ্ট জ্ঞান থাকলে আপনি অনলাইনে যে কোন বয়সী ছাত্রছাত্রীদের দেশে এবং বিদেশে শিখিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

শুধু ইংরেজি আর গণিত এর মত বিষয় নয় লেখা পড়া ছাড়াও সংগীত, নাচ, বাদ্যযন্ত্র, যেকোন কোর্স ইত্যাদি বিষয়ে আপনি প্রশিক্ষণ দিতে পারেন অনলাইনে। অনলাইনে বেশ কিছু ওয়েবসাইট এবং প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলোতে আপনি অনলাইনে শিক্ষা দিতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। 

দক্ষতা যাচাই শেষে উত্তীর্ণ হলে যে কোন কোর্সের ক্ষেত্রে ওয়েবিনার হিসেবে কাজ করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে অনলাইনে। তাছাড়াও একাডেমিক কোন বিষয়ে যেমন পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, ইংরেজি, গণিত, ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী হলে সেই বিষয়ের উপর তথ্যপূর্ণ এবং আলোচনামূলক ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

ওয়েব ডিজাইন করে উপার্জন করুন

পূর্বে বলা হলো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করা যায়। তবে ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনে দক্ষতা থাকলে এখান থেকেও অর্থ উপার্জন করা খুবই সহজ। অনেক ব্যক্তি আছেন যাদের কাছে ওয়েব ডিজাইনের গুরুত্ব নাই তবে একটা সময় তারা বুঝতে পারেন ব্যবসার খাতিরে ওয়েবসাইটের পাশাপাশি সুন্দরভাবে ওয়েবসাইটকে গুছানো অর্থাৎ ওয়েব ডিজাইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 
আবার অনেকে আছেন ওয়েব ডিজাইন পছন্দ করেন কিন্তু তারা নিজেরা জানেন না। এদের সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার। যারা ওয়েব ডিজাইনে দক্ষ হতে চান তারা নিজে ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে তাদের দক্ষতা বাড়াতে পারেন। এছাড়াও ওয়েবসাইট পরিচালনা এবং হালনাগাদের জন্যও ওয়েব ডিজাইনারদের বিশেষ প্রয়োজন হয়। দক্ষতা, কাজের মান এবং কাজের চাহিদার উপর ভিত্তি করে ওয়েব ডিজাইনারদের ইনকাম বৃদ্ধি পেতে থাকে।

পিটিসি থেকে আয়

অনলাইনে বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে ভিজিটের সময় প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে বিজ্ঞাপন দেখলে আপনার ইনকাম হবে। NeoBux, BuxP ইত্যাদি ওয়েবসাইট গুলোকে বলা হয় Paid to Click বা সংক্ষেপে পিটিসি। তবে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে এই কারণে যে, অধিকাংশ পিটিসি ভুয়া হয় এবং এগুলোতে না জেনে ক্লিক করলে বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হতে পারেন। এ ধরনের সাইটে যুক্ত হওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে নিতে হবে। সঠিক সাইটে কাজ করতে চাইলে পূর্বে আপনাকে নিবন্ধন করতে হবে।

ডেটা এন্ট্রি করে ইনকাম

অনলাইনে ইনকাম করার যতগুলো পদ্ধতি আলোচনা করা হলো তার মধ্যে অন্যতম সহজ পদ্ধতি হচ্ছে ডেটা এন্ট্রি। এই কাজে সাধারণত দক্ষতা সামান্যতম হলেই হয় এবং ডেটা এন্ট্রি থেকে তুলনামূলকভাবে ইনকামও একটু কম হয়। তবে আপনার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে বেশ ভালো একটা ইনকাম পেতে পারেন। 

শুরুর দিকে মূলত কপি পেস্ট এই ধরনের কাজ থাকলেও কাজের চাহিদার প্রেক্ষিতে ডেটা এন্ট্রির কাজের ধরনে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। বাসায় একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ, স্মার্ট ফোন, টাইপিং দক্ষতা থাকলে সহজেই ডেটা এন্ট্রি করে আয় করতে পারবেন। প্রায় প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সিং সাইটেই ডেটা এন্ট্রির কাজ রয়েছে।

সার্ভে করে আয়

কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যাদের বিভিন্ন তথ্যের জন্য সার্ভে বা জরিপ এবং রিভিউ এর প্রয়োজন হয়। এভাবে জরিপ এবং রিভিউ এর ফলাফল তাদের কাছে বিক্রি করতে পারেন। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান আছে তাদের হয়ে জরিপ বা সার্চে অংশ নিলে তারা বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ দেয়। Google Opinion Rewards, Poll Pay ইত্যাদির মত আরো বেশ কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো আপনাকে সার্ভের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে সাহায্য করবে। 

তবে এক্ষেত্রে কোনটি সঠিক প্রতিষ্ঠান বা ওয়েবসাইট এবং কোনটি স্ক্যাম সেটি নিখুঁতভাবে যাচাই বাছাই করে নিতে হবে। এ ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংকের তথ্য প্রদান করতে হতে পারে। তাই এই কাজের শুরুতে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

কোর্স বিক্রি হতে পারে আয়ের উৎস

অনলাইনের এ যুগে সরাসরি কোচিং অথবা প্রাইভেট সেন্টার এ গিয়ে প্রশিক্ষণ বা কোর্স করার সময় বা প্রয়োজনীয়তা অনেকের কাছেই থাকে না। তাই তারা অনলাইনে কোর্স খোঁজেন। আপনি কোন বিষয়ে পারদর্শী হলে সেই বিষয়ের উপর বিস্তারিত একটি কোর্স প্ল্যান করে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন অনলাইনে। 

কোর্সের মান যদি ভালো থাকে তবে কোর্স বিক্রি করেই আপনি ভালো অর্থ পেতে পারেন। এসব কোর্সের মধ্যে থাকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্স, ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন সেক্টরের কোর্স, উচ্চ মাধ্যমিকের ইংলিশ স্পোকেন কোর্স, IELTS কোর্স ইত্যাদি।

Page মডারেটর হিসেবে আয় করুন

সাধারণত পণ্যের প্রচার এবং প্রসার ঘটানোর জন্যই ফেসবুকে পেজ খুলে সেগুলো প্রতারণা চালানো হয়। তবে আপনার নিজের যদি কোন পণ্য বা নিজস্ব কোন ব্যবসা না থাকে তবে বড় কোন প্রতিষ্ঠান এর বড় পেজে মডারেটর হিসেবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। পণ্যের হাল নাগাদ করা, পূর্ণ তথ্য সঠিকভাবে পোস্ট করা, পণ্যের অর্ডার নেওয়া এবং সাপ্লাই নিশ্চিত করা, কমেন্টের রিপ্লাই দেয়া, কাস্টমারের আকর্ষণ ধরে রাখা ইত্যাদি কাজগুলো করতে হয় পেজ মডারেটর হিসেবে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে ইনকাম করুন

বর্তমান অনলাইন যুগে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আপনি আপনার জায়গা থেকেই পৃথিবীর যেকোনো দেশে যে কোন প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ব্যক্তির ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এ কাজের দায়িত্ব হিসেবে আপনাকে যে কাজগুলো দেয়া হবে আপনি সময় মতো কাজটি করে সাবমিট করবেন আপনার নিজের ঘরে বসে থেকেই। কাজের পারদর্শিতা এবং দক্ষতার উপর আপনার আয় বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়

ফটোগ্রাফি করে আয়

অনেকে আছেন যারা এখানে সেখানে ঘুরতে পছন্দ করেন এবং হাতে একটি স্মার্ট ফোন থাকলে তো কথাই নেই অসংখ্য ছবি উঠে যায় স্মার্টফোনে। এই ভালো লাগার কাজটিকে যদি পেশায় পরিণত করতে চান তাহলে আপনার স্মার্টফোনে তোলা ছবিগুলোকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে বিক্রি করলে পেয়ে যাবেন নগদ অর্থ। এরকমের জনপ্রিয় কিছু স্টক ফটোগ্রাফি সাইট হল Getty Images, Shutterstock ইত্যাদি। 
এই ধরনের ওয়েবসাইট মূলত বিভিন্ন কাস্টমারের কাছ থেকে ছবি কিনে ওয়েব সাইটে সংগ্রহ করে। তবে এ ধরনের ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করতে চাইলে আপনার ছবিগুলো হতে হবে শতভাগ অরিজিনাল।

শেষ কথা 
ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম এর সুযোগ যেমন অনেক তৈরি হয়েছে ঠিক তেমনি সেই সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতারণা বেড়ে চলেছে। আধুনিক যুগের মানুষজন ঘরে বসেই অনলাইনে বাড়তি ইনকামের চেষ্টা করে থাকেন। বাড়তি ইনকামের এই আকাঙ্ক্ষাকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতারণার ফাঁদ পেতে থাকেন। সকলকে খেয়াল রাখা উচিত ইনকাম করতে গিয়ে যেন বাড়তি টাকা খোয়াতে না হয় কোন প্রতারণায় প্রতারিত হয়ে। 

যাইহোক, অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায় সেই উপায় গুলো জানলেন। এই উপায় গুলোর ভেতর থেকে যে কোনটি কাজে লাগাতে পারেন। আপনাদের সকলের উন্নতি কামনা করে আজকে এখানেই শেষ করছি। অনলাইনে ইনকাম করুন স্বচ্ছল জীবন যাপন করুন। লেখাটি ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন আর ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url