কী-বোর্ড এর কিছু শর্টকাট - কাজের গতি বাড়াতে জেনে নিন

স্টুডেন্ট, ফ্রিল্যান্সার অথবা চাকরিজীবী যে কারো বর্তমানে এই ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ছাড়া চলে না। কম্পিউটার বা ল্যাপটপের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট ডিভাইস হচ্ছে মাউস এবং কিবোর্ড। বিভিন্ন কাজ আমরা মাউস দিয়ে করতে পারি তবে এর সাথে যদি কী-বোর্ড এর কিছু শর্টকাট জানা থাকে তাহলে তা আমাদের কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করবে। এই শর্টকাটগুলো যদি জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য।

“কম্পিউটার/ ল্যপটপ” এর আজকের এই পর্বে আমরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কী-বোর্ড এর কিছু শর্টকাট বিষয়ে জানার চেষ্টা করব। এই শর্টকাট কি গুলোর মূল কি পয়েন্ট হচ্ছে Alt, Ctrl, Shift, Home, End, Windows key। কাজের গতি বাড়াতে সবগুলো শর্টকাট সম্পর্কে জানতে হলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

বর্তমানের আধুনিক সময়ে বাসা থেকে অফিস এবং বিনোদন থেকে প্রয়োজন সবকিছুতেই আমাদের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার লাগে। ল্যাপটপ বা কম্পিউটার যেমন আমাদের কাজের গতি অনেক বৃদ্ধি করেছে তেমন কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। তবে আমাদের কাজকে আরো এক ধাপ সহজ করে নিতে চাইলে কম্পিউটারের বেসিক কিছু শর্টকাট কী রয়েছে যেগুলো আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজের গতি বাড়াতে জেনে নিন কী-বোর্ড এর কিছু শর্টকাট।

একসাথে অনেকগুলো প্রোগ্রাম চালু থাকলে এক প্রোগ্রাম থেকে আর এক প্রোগ্রামে সুইচ করার জন্য Alt + Tab বাটন চাপুন।

উইন্ডোজের যে ট্যাবে বর্তমান প্রোগ্রামে আপনি কর্মরত আছেন সেখানে File Menu option ওপেন করতে Alt + F বাটন প্রেস করুন।

বর্তমান প্রোগ্রামে কাজ করা অবস্থায় Open Edit option চালু করতে চাইলে Alt + E বাটন প্রেস করুন।

এই মুহূর্তে যতগুলো প্রোগ্রাম চালু আছে সবগুলোকে একসাথে ক্লোজ করতে চাইলে Alt + F4 বাটন চাপুন।

যেকোন ফোল্ডার, ফাইল, ডকুমেন্ট, শর্টকাট ইত্যাদির প্রপার্টিজ জানতে চাইলে সেটিকে প্রথমে সিলেক্ট করে Alt + Enter বাটন প্রেস করতে হবে।

বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় বুক মার্ক দিয়ে রাখার প্রয়োজন পড়ে পরবর্তীতে সহজেই যেন সেই ওয়েবসাইট খুজে পাই। তো বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজারে Ctrl + D প্রেস করলে সেই পেজটি বুকমার্ক করা যায়।

কিছু কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলোতে নতুন বা ফাঁকা ডকুমেন্ট চালু করতে Ctrl + N প্রেস করতে হয় যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড। আবার বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজারে Ctrl + N প্রেস করলে নতুন ট্যাব খোলা হয় যেমন chrome browser।

কাজ করতে করতে কোন সমস্যায় পড়লে হেল্প অপশন নিয়ে আসতে চাইলে F1 বাটন প্রেস করুন। প্রায় প্রতিটি উইন্ডোজ প্রোগ্রামে এফ ওয়ান সাধারণত Help হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

মাঝে মাঝে আমাদের যে কোন ফাইল যেমন অডিও, ভিডিও, ডকুমেন্টস ইত্যাদি rename করার প্রয়োজন পড়ে। সে ক্ষেত্রে ফাইলটি সিলেক্ট করে F2 বাটনে প্রেস করলে রিনেম এর অপশন আসবে।

আপনি যে উইন্ডোতে কাজ করছেন কিছুক্ষণ পরপর সেই উইন্ডোকে রিফ্রেশ করতে চাইলে F5 বাটন চাপুন। আবার সকল উইন্ডো ক্যানসেল করে ডেস্কটপে গিয়ে F5 বাটন চাপ দিলেও পুরো কম্পিউটার রিফ্রেশ হবে।

এই দুটি কি সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয় লেখালেখির ক্ষেত্রে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বেশ কিছু লিখলেন এরপরে সেই লেখাগুলোকে পরিবর্তন করতে চাইলে মনে করুন ফন্ট বোল্ড করবেন বা কালার করবেন বা হাইলাইট করবেন সে ক্ষেত্রে পুরো লেখাটিকে সিলেক্ট করার জন্য Ctrl + A বাটন প্রেস করতে হবে।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এ অথবা যে কোন লেখাকে মোটা অর্থাৎ বোল্ড করতে চাইলে Ctrl + B

বাটন প্রেস করুন।

আপনি একটা সফটওয়্যারে কাজ করছেন সেখানে কোনো ফাইল নতুনভাবে ওপেন করতে হবে অথবা এড করা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে Ctrl + O বাটন প্রেস করলে নতুন ফাইলটি ওপেন হবে।

যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট, অডিও ভিডিও ফাইল, যে কোন লেখা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে চাইলে সেটিকে সিলেক্ট করে Ctrl + X বাটন প্রেস করতে হবে।

যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট, অডিও ভিডিও ফাইল, যে কোন লেখা স্থায়ীভাবে ডিলিট বা মুছে ফেলতে চাইলে সেটিকে সিলেক্ট করে Shift + Del বাটন প্রেস করতে হবে।

লেখার মধ্যে যেকোনো লাইনকে কোটেশন হিসেবে অথবা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বোঝাতে চাইলে আমরা লেখাটিকে একটু বাঁকা অর্থাৎ ইটালিক ফর্মে লিখে থাকি। যে কোন লেখাকে ইটালিক ফর্মে দেখাতে চাইলে প্রথমে সে অংশটুকু সিলেক্ট করে Ctrl + I বাটন প্রেস করতে হবে। আবার এই বাটন চাপলেই ইটালিক ফর্ম রিমুভ হয়ে পূর্বের ফর্মে ফিরে যাবে।

ইটালিক ফার্মের মতই কোন লাইনকে বা লাইন এর নিচে আন্ডারলাইন করতে চাইলে সেই লেখাটিকে সিলেক্ট করে Ctrl + U বাটন প্রেস করুন। আবার সিলেক্ট করা অবস্থাতেই Ctrl + U প্রেস করলে আন্ডারলাইন রিমুভ হয়ে যাবে।

যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট, অডিও ভিডিও ফাইল, যে কোন লেখা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কপি করতে চাইলে সেটিকে সিলেক্ট করে Ctrl + C বাটন প্রেস করতে হবে।

যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট, অডিও ভিডিও ফাইল, যে কোন লেখা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কপি করতে চাইলে সেটিকে সিলেক্ট করে Ctrl + Ins বাটন প্রেস করতে হবে।

যেকোনো ওয়েব পেজ, ডকুমেন্ট অথবা অন্য কোন উইন্ডো খোঁজার জন্য find window option চালু করতে Ctrl + A বাটন চাপুন।

আপনার কাজ করা শেষে যেকোন ডকুমেন্ট বা ফাইল সেভ করার দরকার হলে Ctrl + S বাটন চাপুন।

কপি অথবা কাট করা যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট বা লেখা কে কোন জায়গায় স্থাপন করতে চাইলে Ctrl + V বাটন চাপতে হবে।

কপি অথবা কাট করা যেকোনো ফাইল, ডকুমেন্ট বা লেখা কে কোন জায়গায় স্থাপন করতে চাইলে Shift + Ins বাটন চাপতে হবে।

কোন প্রোগ্রামে কাজ করার সময় কখনো কখনো পরবর্তী অ্যাকশনে ফিরে যেতে হয়। লেখার সময়, গ্রাফিক্সের কাজ করার সময় বা যেকোনো ধরনের কাজ করার সময় মাঝেমধ্যে আমাদের পরের ধাপের কাজটিতে যেতে হয়। এর জন্য Ctrl + Y বাটন চাপ দিতে হবে।

কোন প্রোগ্রামে কাজ করার সময় কখনো কখনো পূর্বের অ্যাকশনে ফিরে যেতে হয়। লেখার সময় গ্রাফিক্সের কাজ করার সময় বা যেকোনো ধরনের কাজ করার সময় মাঝেমধ্যে আমাদের আগের ধাপের কাজটিতে যেতে হয়। এর জন্য Ctrl + Z বাটন চাপ দিতে হবে।

কোন লেখার ভিতরে অতিরিক্ত কোন তথ্য দিতে চাইলে কোন পেজ বা ওয়েবসাইটের লিংক দেয়ার প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে Ctrl + K বাটন প্রেস করুন।

যে ডকুমেন্ট অথবা পেজে কাজ করছেন সেটা প্রিন্ট করতে চাইলে Ctrl + P বাটন চাপুন।

কোন পেজে বা ওয়েবসাইট কিছু পড়ছেন অথবা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এ কিছু লিখছেন। সেই লাইনের মাঝে বা শুরুতে থাকলে আপনি যদি শেষে যেতে চান তাহলে End বাটন চাপুন।

ডকুমেন্টের মাঝে বা শুরুতে থাকলে একদম শেষে যেতে চাইলে Ctrl + End বাটন চাপুন।

কোন পেজে বা ওয়েবসাইট কিছু পড়ছেন অথবা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এ কিছু লিখছেন। সেই লাইনের মাঝে বা শেষে থাকলে আপনি যদি শুরুতে যেতে চান তাহলে Home বাটন চাপুন।

কোন ডকুমেন্টের শেষে থাকা অবস্থায় একদম শুরুতে যেতে চাইলে Ctrl + Home বাটন চাপুন।

প্রথমে Ctrl এবং পরে Esc চাপলে Start Menu প্রদর্শন করবে।

আপনি যদি কোন কিছু লিখতে থাকেন এবং লেখার যে অবস্থানে আছেন সেখান থেকে একদম শুরু পর্যন্ত হাইলাইট করতে চান তবে Shift + Home বাটন প্রেস করুন।

আপনি যদি কোন কিছু লিখতে থাকেন এবং লেখার যে অবস্থানে আছেন সেখান থেকে একদম শেষ পর্যন্ত হাইলাইট করতে চান তবে Shift + End বাটন প্রেস করুন।

স্বাভাবিক অবস্থাতে এবং মাঝে মাঝে কম্পিউটার হ্যাং করলে Ctrl + Esc বাটন চাপ দিলে স্টার্ট মেনু ওপেন হয়। সেখান থেকে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বা উইন্ডো ওপেন করতে পারি।

একসাথে কতগুলো প্রোগ্রাম চালু আছে সেটা জানার জন্য Ctrl + Shift + Del বাটন প্রেস করতে হবে। প্রোগ্রামের লিস্ট দেখা গেলে সেখান থেকে কোন প্রোগ্রাম আমরা cancel করতে চাইলে করতে পারি।

দুই বা তার অধিক প্রোগ্রাম একসাথে চালু থাকলে কখনো কখনো একটি বা দুইটি প্রোগ্রামকে minimize করার প্রয়োজন হলে Windows key + বাটন প্রেস করবেন।

দুই বা তার অধিক প্রোগ্রাম একসাথে চালু থাকলে কখনো কখনো একটি বা দুইটি প্রোগ্রামকে minimize করার প্রয়োজন হয়। সেই প্রোগ্রামগুলিকে পরবর্তীতে আবার maximize করার প্রয়োজন হলে Windows key + বাটন প্রেস করবেন।

একবারে একটি ওয়ার্ড বাম দিকে সরাতে Ctrl + বাটন প্রেস করুন।

একবারে একটি ওয়ার্ড ডান দিকে সরাতে Ctrl + বাটন প্রেস করুন।

Run ডায়লগ বক্স চালু করতে চাইলে উইন্ডোজ বাটন তারপরে R একসাথে প্রেস করতে হবে। Run ডায়লগ বক্স এর মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করা যায়। এর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি যে কাজটি করি সেটি হল টেম্পোরারি ফাইল ক্লিন করে থাকি।

একসাথে বেশ কয়েকটি tab অথবা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করার সময় মাঝেমধ্যেই ডেস্কটপে আসার বা ডেস্কটপ দেখার প্রয়োজন পড়ে। সে ক্ষেত্রে শর্টকাট হল Windows key + D।

যারা কম্পিউটার বিষয়ে অনেক দক্ষ এবং অভিজ্ঞ তাদের জন্য আজকের এই লেখাটি নয়। এই লেখাটি তাদের উপকারে আসবে যাদের কাছে কম্পিউটারের বেসিক অনেক জিনিস এখনো অজানা রয়েছে অথবা যারা কম্পিউটার বিষয়ে কেবল জ্ঞান অর্জন করা শুরু করেছে। কম্পিউটারের কিবোর্ড এর যে কী বা বাটন গুলো জানা বেশি জরুরী প্রাথমিক অবস্থায় সেগুলো উল্লেখ করে সেগুলোর কার্যাবলী ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনারা বেশ উপকৃত হবেন।

যাইহোক, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কাজের গতি বাড়াতে কী-বোর্ড এর কিছু শর্টকাট জানলেন। নতুন কিছু যদি জেনে থাকেন এবং লেখাটিতে ভালো লেগে থাকে তবে পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন আর ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। নিয়মিত Mubin Pedia ভিজিট করার অনুরোধ থাকলো। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।