মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় | অনলাইন
ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করতে চাচ্ছেন? মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলো খুজছেন? তাহলে আপনি সঠিক ওয়েবসাইটের সঠিক আর্টিকেলই পড়ছেন। আজকের লেখাটি আপনার জন্যই।
“অনলাইন ইনকাম” এর আজকের এই পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলো সম্পর্কে। তবে এই ১৬টি উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে এ আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। তো চলুন জেনে নেয়া যাক।
মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায়
আমরা বর্তমান প্রজন্মের লোকজন দিনের বেশ কিছুটা সময় অনলাইনে অতিবাহিত করি প্রয়োজনে অথবা বিনোদনের খাতিরে। তবে এই অনলাইন থেকেই আমরা বেশ কিছু উপায়ে আয় করে করতে পারি। অফলাইন এবং অনলাইন থেকে ইনকাম করার অসংখ্য উপায় রয়েছে তবে তার মধ্যে থেকে অনলাইনের সেরা কয়েকটি উপায় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হচ্ছে যেগুলো থেকে আপনারা ধৈর্য এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ করে গেলে অবশ্যই প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। তো চলুন অনলাইনে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করুন
বর্তমানে শুধু স্টুডেন্ট অথবা বেকাররাই নন বরং অনেক চাকরিজীবী ব্যক্তিও ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত, করছেন বাড়তি আয়। আপনার দক্ষতা এবং কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করে পার্ট টাইম জব হিসেবেও যদি নেন তবুও মাসে ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অনায়াসে রোজগার করতে পারবেন। ‘ফ্রিল্যান্সিং’ শব্দটির ব্যাপকতা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর এর মাধ্যমে রোজগারের ব্যবস্থা যেমন বাড়ছে ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও দিনে দিনে বাড়ছে। একটি দুটি কাজ নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং নয় বরং ফ্রিল্যান্সিং এর অন্তর্গত প্রচুর কাজ রয়েছে যেমন ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ব্লগিং ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ আপনি চাকরি করেন।
আপনি নিজে হাসি খুশি থাকতে এবং অন্যকে হাসাতে পছন্দ করেন এবং এই বিষয়ে আপনার যথেষ্ট দক্ষতা রয়েছে। তাহলে অবসর সময়ে আপনার এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একটি ফানি বা কৌতুক ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করলে সেখান থেকে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে রোজগার করতে পারবেন।
আবার ধরুন আপনার ব্লগিং এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে এবং এ বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতাও রয়েছে অনেক। তাহলে আপনার ক্লায়েন্টের চাহিদা মত একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে ইনকাম করুন
বর্তমান সময়ে অনলাইন ইনকামের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম গুলোর অন্যতম ইউটিউব। আপনি যদি বেকার হয়ে থাকেন অথবা কোন চাকরি করুন না কেন অবশ্যই সময় কি কাজে লাগিয়ে ফ্রিতে ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে আপনার পছন্দমত ভিডিও আপলোড করে মাসে ৩০ হাজার টাকা সহজেই আয় করতে পারবেন।
ইউটিউবে চ্যানেল খুলেই সাথে আয় শুরু হবে না এজন্য আপনাকে কমপক্ষে এক বছর সময় দিতে হবে ইউটিউব নীতিমালা এবং google এডসেন্স নিয়ম অনুযায়ী। তবে দ্রুত আয় করতে হলে ইউটিউব শর্টস ভিডিও আপলোড করতে পারেন। ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে সঠিকভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলার এবং ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোডের নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।
Facebook পেজ দিয়ে আয় করুন
আপনার যদি একটি ফেসবুক পেজ থাকে এবং তাতে যদি লক্ষ লক্ষ ফ্যান ফলোয়ার্স থেকে থাকে তাহলে আপনার এই পেজ হতে পারে ইনকামের একটি অন্যতম উৎস। আপনার পেজে যদি মনিটাইজেশন অন করা থাকে তবে সাধারণ যে কোন পোস্ট বা ভিডিওতে কয়েক হাজার ভিউ হলেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট নিয়মে অর্থ প্রদান করে থাকে। তবে এর বাইরেও আপনি বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেন।
যেমন ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল (আপনি নিজের কোন কোম্পানি বা কোম্পানি থাকলে তার প্রোডাক্ট এর প্রচারণা বা বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি), স্পন্সরড পোস্ট বা কনটেন্ট (বড় কোন প্রতিষ্ঠান আপনাকে তাদের কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে কন্টেন্ট তৈরি করতে বলবে এবং তার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করা হবে), পেইড বিজ্ঞাপন প্রচার (বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিষ্ঠান এবং পণ্যের প্রচারের জন্য অ্যাড তৈরি করে আপনার ফেসবুক পেজে প্রচার করবে এজন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করা হবে), অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (উপরে আলোচনা করা হয়েছে এ বিষয়ে) ইত্যাদি।
পেজ মডারেটর হিসেবে ইনকাম করুন
বর্তমানে অনলাইন ইনকামের ক্ষেত্রে পেজ মডারেটর এর কাজটিও দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান নিজেরা তাদের ফেসবুক পেইজ মনিটর করার সময় পান না তাই তারা নির্দিষ্ট বেতন দিয়ে দক্ষ পেজ মডারেটর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আপনি যদি ফেসবুকে একটিভ থাকেন এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার দক্ষতা থাকে তবে পেজ মডারেটর এর কাজ করে আপনি মাসে ৩০ হাজার টাকা সহজেই ইনকাম করতে পারবেন।
আরও পড়তে পারেন ঃ বাংলাদেশের জরুরী সেবার হটলাইন নাম্বার সমূহ
পেজটা যদি কোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট কেন্দ্রিক হয় তবে সেই পণ্যের গুণগত মানের বৈশিষ্ট্য প্রচার করা, পণ্যের তথ্য হালনাগাদ করা, পণ্য সম্পর্কিত পোস্ট দেয়া, পোস্টের কমেন্টে রিপ্লাই দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো আপনাকে করতে হবে পেজ মডারেটর হিসেবে।
ই-কমার্স ব্যবসা করে আয় করুন
অনলাইন এবং প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আমরা এখন ঘরে বসেই সকল ধরনের প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারি। ই-কমার্স বলতে আমরা ঘরে বসে অনলাইনে পণ্য কেনা বেচাকেই বুঝে থাকি। তাই আপনিও যদি অনলাইন থেকে অর্থাৎ ই-কমার্স ব্যবসা করে মাসে ৩০ হাজার টাকার মত ইনকাম করতে চান তাহলে অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম শুরু করতে পারেন। এজন্য ইউটিউবে বেশ কিছু ভিডিও দেখলেই আপনি WordPress দিয়ে শপিং ওয়েবসাইট বানানোর পদ্ধতি গুলো জেনে নিতে পারবেন।
ট্রান্সলেশন করে আয় করুন
বাংলা এবং ইংরেজি ছাড়াও আরো বেশ কিছু ভাষার উপর যদি আপনার দক্ষতা থেকে থাকে তবে ট্রান্সলেশন হতে পারে আপনার অনলাইন থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা উপার্জনের একটি মাধ্যম। বিশ্বের অনেক বড় এবং নামিদামি প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন ডকুমেন্ট এবং সার্ভিসকে অন্য ভাষায় রূপান্তরের জন্য ট্রান্সলেটর হায়ার করে থাকেন।
ফাইবার, আপ ওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সিং ডটকম এর মতো বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ট্রানসলেশন এর কাজ পেয়ে যাবেন। এই কাজ পাওয়ার জন্য এবং এটা যখন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোন ভাষার ব্যাকরণ এবং সেই ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই যথেষ্ট ভালো করে জানতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন ট্রান্সলেটর কে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
ব্লগিং সাইট থেকে আয় করুন
আপনি যদি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন তবে আপনার এ পছন্দের লেখালেখি কে কাজে লাগিয়েই মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করা সম্ভব। আপনি ব্লগিংকে প্রফেশনালিও নিতে পারেন আবার পার্টটাইম কাজ হিসেবেও নিতে পারেন। স্টুডেন্ট, গৃহিণী এবং চাকরিজীবী যে কেউ ব্লগিং করে আয় করতে পারেন। আপনার যে বিষয়ে ভালো ধারণা এবং জ্ঞান রয়েছে সেই বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখে ব্লগিং সাইট থেকে আয় করতে পারেন।
অবশ্যই পড়ুনঃ কোরবানির দিনে যে ১০ টি কাজ অবশ্যই করবেন
তবে একটি বিশেষ কথা মনে রাখতে হবে, ব্লগিং মূলত প্যাসিভ ইনকামের জন্য অর্থাৎ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ধৈর্যের সাথে কাজ করে গেলে পরবর্তীতে একটি ভালো ইনকাম আসবে এবং শুরুর দিকে তেমন একটা ইনকাম নাও আসতে পারে। তবে ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা বাড়লে এবং দীর্ঘ সময় পরে ব্লগিং করে আনলিমিটেড টাকা উপার্জন করাও সম্ভব।
কোর্স বিক্রি করে আয়
ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির কল্যাণে পুরো পৃথিবী আজকে আমাদের হাতের মুঠে চলে এসেছে। আমরা শখের বসে হোক কিংবা প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করেই হোক যেকোনো কিছু শিখতে পারি অনলাইন থেকে এক ক্লিক করেই। নিজের জ্ঞান বৃদ্ধির পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অনলাইন কোর্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখন ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয়ে অজস্র অনলাইন কোর্স রয়েছে। আপনি যদি কোন বিষয়ে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন এবং সেই বিষয়ে যদি আপনার যথেষ্ট পরিমাণ জ্ঞান থাকে তাহলে আপনিও সে বিষয়ে কোর্স তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।
একাডেমিক বিষয়ে যেমন ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, রান্নার বিষয়ে যেমন বিভিন্ন রেসিপি, কেক তৈরীর নিয়ম, অনলাইন ইনকামের বিষয়ে, ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন সেক্টরে, হাতের কাজ ইত্যাদি বিষয়ে কোর্স করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন Facebook, Instagram, YouTube ইত্যাদি মাধ্যমে অথবা নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সহজে বিক্রি করতে পারবেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করে আয় করুন
কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিদিনের কাজের রুটিন পরিচালনা করার জন্য ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করে থাকে। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করতে হলে আপনাকে ডেটা এন্ট্রি, ক্যালেন্ডার ম্যানেজমেন্ট, মিটিং সিডিউল, ইমেইল ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি কাজগুলো সঠিকভাবে এবং দক্ষতার সাথে করতে হবে।
দক্ষতা এবং পারফরম্যান্স বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার আয় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়াও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধির সুবিধা থাকলেও প্রাথমিক অবস্থাতে খুব সহজে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে উপার্জন করুন
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন এর কথা শুনে অনেকে অবাক হবেন এটা আবার কি রকম ব্যবসা! হ্যাঁ এটা আসলে কোন ব্যবসা নয়। আপনি যদি ছবি তুলতে পছন্দ করেন বা ফটোগ্রাফির অভিজ্ঞতা থাকে তবে যে কোন ধরনের ফটো অনলাইনে বিক্রি করে মাসে ভালো অংকের অর্থ রোজগার করতে পারবেন।
Getty Image, Unsplash ইত্যাদি সহ আরো বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে আপনি আপনার তোলা ছবি বিক্রি করতে পারেন। তবে এসব ওয়েবসাইটে আপনাকে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে এবং মানসম্মত ছবি থাকতে হবে।
আর্টিকেল রাইটিং জব
আর্টিকেল রাইটিং জব কে ব্লগিং এর সাথে গুলিয়ে ফেললে হবে না। ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আপনার নিজের ওয়েবসাইটে নিজের লেখা পোস্ট করে সেখান থেকে ইনকাম করা বোঝায়। তবে আর্টিকেল লাইটিং বলতে বোঝায় আপনি নিজের ব্লগে পোস্ট করার পাশাপাশি অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট অথবা এজেন্সির জন্য আর্টিকেল লিখে দিতে পারেন।
অনলাইন মার্কেটিং এজেন্সি, ই-কমার্স ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন ফাইবার, আপ ওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ইত্যাদিতে আর্টিকেল রাইটিং জবের কাজ পেয়ে যাবেন। লেখালেখির দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার কাজের চাহিদা এবং দাম বাড়তে থাকবে। তবে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা ছাড়াও আপনি কি পরিমান কাজ করছেন, আপনার কনটেন্টে ওয়ার্ড সংখ্যা কত এবং কি ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি কাজটি নিচ্ছেন বা করে দিচ্ছেন তার উপরও আপনার ইনকাম নির্ভর করবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করুন
অনলাইন ইনকাম এর ক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে দিনে দিনে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পুরো সিস্টেম যদি ভালো করে বুঝে থাকেন এবং সে অনুযায়ী দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারেন তাহলে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে কি?
আরও পড়তে পারেনঃ শীতে বা গরমে হাতের তালু ঘামা প্রতিরোধ করুন
ধরুন আপনার একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে অথবা ফেসবুক পেজ রয়েছে যেখানে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার্স রয়েছে। এখন আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট বা পেজ বা চ্যানেলের কনটেন্টের মাধ্যমে কোন কোম্পানির কোন প্রোডাক্টের প্রচার-প্রচারণা করে বিক্রি করে থাকেন তবে আপনার কন্টেন্টে দেয়া লিংকে ক্লিক করে অথবা কোড ব্যবহার করে প্রতিটা কাস্টমার যতবার কিনবে ততবার একটা নির্দিষ্ট অংশের কমিশন আপনাকে দেওয়া হবে। এটিই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
সহজ কথায় বলা যায় অন্যের প্রোডাক্ট আপনি বিক্রি করে দিলে যে ইনকাম হবে সেটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। উদাহরণস্বরূপ কোন গেজেট কোম্পানি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের নতুন লঞ্চ হওয়া হেড ফোন বিক্রি করতে চায়।
এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার ভিডিওতে সে কোম্পানির লিংক দেন অথবা কোড ব্যবহার করে থাকেন এবং ভিডিওতে সেই হেডফোন সম্পর্কে প্রচার করে থাকেন তাহলে আপনার ভিডিও থেকে কোন ব্যক্তি বা কাস্টমার আপনার কোড বা সেই লিংকে ক্লিক করে যদি কিনে থাকেন হেডফোন তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কমিশন হিসেবে আপনাকে দেয়া হবে। এটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
শুধু যে ইউটিউব, ওয়েবসাইট বা ফেসবুকের মাধ্যমে করা যায় তা নয় এগুলো ছাড়াও whatsapp, ব্লগ পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ইত্যাদির মাধ্যমেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
মোবাইল অ্যাপ তৈরির মাধ্যমে আয় করুন
একটা সময় ছিল যখন স্মার্টফোনের জন্য অ্যাপ তৈরির জন্য প্রয়োজন হতো কোডিং এর জ্ঞান। তবে এখন ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ এর মাধ্যমে কোডিং এর জ্ঞান না থাকলেও আপনি স্মার্টফোনের জন্য ছোটখাটো প্রয়োজনীয় হোক অথবা বিনোদনমূলক হোক অ্যাপ তৈরি করে ইনকাম করতে পারবেন।
এই ধরনের অ্যাপ তৈরি করে সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করে জনপ্রিয়তা পেলে সেখান থেকেই মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে আপনার যদি কোডিং বিষয়ে জ্ঞান থাকে তবে কিছু পেইড ওয়েবসাইট বা প্লাটফর্ম গুলোতে আপনার তৈরি অ্যাপ বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ফুড সার্ভিস দিয়ে অর্থ আয় করুন
বর্তমান সময়ে বেকারত্ব ঘোচাতে মানুষ খাবার বিক্রি করে হাজার থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে খাবার বিক্রি করে আপনি অনায়াসে ৩০ হাজার টাকা মাসে রোজগার করতে পারবেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন ফেসবুক পেজ এবং ফেসবুক পেজটি অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট এলাকার জন্য চালু করতে হবে।
জনপ্রিয় অনলাইন ফুড সার্ভিস “ফুডপান্ডার” মতো দেশব্যাপী সার্ভিস দিতে চাইলে আপনাকে অনেক অর্থ খরচ করতে হবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে ফুড সার্ভিস চালু করতে চাইলে অল্প অর্থ বিনিয়োগ করে আপনি আপনার ব্যবসা চালু করতে পারেন। খাবার প্রচার করতে চাইলে আপনার খাবারের মান ভালো হতে হবে এবং তার সাথে প্রাথমিক পর্যায়ে খাবারের দাম তুলনামূলক কম রাখতে হবে।
SEO করে আয় করুন
অনলাইন ইনকামের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা SEO সম্বন্ধে জেনে থাকলেও সাধারণ মানুষদের কাছে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ অপরিচিত হতে পারে। আমরা বিভিন্ন তথ্য ও সন্ধানের জন্য গুগলে বা ইউটিউবে সার্চ করে থাকি। তবে কারো চ্যানেল বা ওয়েবসাইট rank করানোর জন্য অর্থাৎ সার্চ করার পরে সবার প্রথমে নিয়ে আসার জন্য একটি অপটিমাইজেশন করা হয় এটিকে বলা হয় Search Engine Optimization বা SEO।
অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট বা চ্যানেলকে র্যাংক করানোর জন্য SEO এক্সপার্ট হায়ার করে থাকেন। তাই এই ক্ষেত্রে আপনার যদি অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকে তবে আপনি এখান থেকে হেসে খেলেই মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।
অনলাইন টিউশনি করে ইনকাম করুন
অফলাইনে টিউশনি করে মোটামুটি রোজগার করা যায় সেটা আমরা সকলেই জানি। তবে অনলাইন টিউশনিরও দিনে দিনে চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষক অথবা স্টুডেন্ট সবারই এখন ব্যস্ততা বাড়ছে। সময় বাঁচাতে অনেক স্টুডেন্ট এবং অভিভাবক অনলাইন টিউশনের দিকেই ঝুঁকছেন। যেকোনো বিষয়ে একাডেমিক হোক বা অন্য কোন সৃজনশীল কাজেই হোক যদি আপনার দক্ষতা থাকে তবে আপনি অনলাইন টিউশনি করে মাসে অনায়াসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
যেকোনো অ্যাকাডেমিক বিষয়ের পাশাপাশি নাচ, গান, ছবি আঁকা, গিটার বাজানো, সুন্দর হাতে লেখা শিখানো ইত্যাদি বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে শিক্ষা দিতে পারেন। তবে অনলাইন টিউশনের জন্য অবশ্যই আপনার একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ, Zoom Software এবং দ্রুতগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। অনলাইনে শুধু সরাসরি পড়িয়ে টিউশন করা যায় ব্যাপারটা সেরকম নয়। আপনি ইউটিউবে অথবা আপনার ব্লগ সাইটে কোন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট তৈরি করে পাবলিশ করেও সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
শেষ কথা
উপরে এতক্ষণ যাবৎ অনলাইনে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। উপায় গুলো থেকে আপনাদের যেটি পছন্দ হয় অথবা আপনাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সাথে যে উপায় গুলো মিলে যায় সেগুলো থেকে চেষ্টা করুন আয় করার। মনে রাখবেন একজনের পক্ষে সবগুলো উপায় কাজে লাগানো সম্ভব নয়।
আপনাদের সকলের সফলতা কামনা করে আজকে এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী আবার কোন নতুন টপিক নিয়ে আপনাদের সাথে যোগাযোগ হবে। আজকের লেখাটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে বা কোন উপায় যদি আপনাদের পছন্দ হয় তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সবাই ভাল থাকবেন, ধন্যবাদ।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url