Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যেকোনো ধরনের এপ্লিকেশন ইন্সটল করার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সাইট হল গুগল প্লে স্টোর। প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড এবং ইন্সটল করার পরবর্তী কোন সময়ে আপডেট আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই অ্যাপ্লিকেশনটি আপডেট হয়ে যায়। 
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

এতে মোবাইলে এপ্লিকেশনের ডেটা সাইজ বৃদ্ধির সাথে সাথে ফোনের স্টোরেজ কমতে শুরু করে। এ সমস্যার সহজ সমাধান হলো প্লে স্টোর থেকে অটো আপডেট বন্ধ করে দেয়া।

এখানে দুটি প্রশ্ন আসতে পারে প্রয়োজন না থাকলে অটো আপডেট সিস্টেম চালু করা আছে কেন এবং অটো আপডেট বন্ধ করলে কোন সমস্যা হবে কিনা? দুটি প্রশ্নের উত্তর প্রায় একই রকম। সাধারণত প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অ্যাপ্লিকেশনের নিত্যনতুন ফিচার নিয়ে আসে যাতে করে ব্যবহারকারীরা খুব সহজে স্মার্টভাবে তাদের কাজ করতে পারে। 

এজন্য তারা প্রতিনিয়ত তাদের অ্যাপ্লিকেশনগুলো হালনাগাদ করতেই থাকে। একই সাথে ব্যবহারকারীরাও নিয়মিত এপ্লিকেশন গুলো প্লে স্টোর থেকে আপডেট দিয়ে থাকেন। এজন্যই মূলত অটো আপডেট সিস্টেমটি চালু আছে। 

আরও পড়ুন

তবে হালনাগাদ করতে করতে স্মার্টফোনের মেমোরি কমতে থাকার কারণ হলো কিছু কিছু অ্যাপ্লিকেশন খুব বেশি মাত্রায় স্টোরেজ কাভার করে। যেমন facebook, messenger, youtube, google প্লে সার্ভিস, গুগল প্লে স্টোর ইত্যাদি অ্যাপ্লিকেশন গুলো নিয়মিত আপডেট হওয়ার ফলে এদের ফাইল সাইজ অনেক বেশি হয়ে যায়।

এবার আসা যাক অটো আপডেট বন্ধ করলে কোন সমস্যা হবে কিনা। না, প্রধানত কোন সমস্যাই হবে না। একটু আগেই বলা হলো অটো আপডেট না করলে আপনি নতুন নতুন ফিচার সম্বলিত সুবিধা গুলি পাবেন না। ব্যস এটুকুই তবে আপনার কাজ আপনি চালিয়ে যেতে পারবেন। যেমন ধরুন একসময় ফেসবুক এ কোন টেক্সট কপি করার সুবিধা ছিল না। 

মেটা কর্তৃপক্ষ যখন এই সুবিধাটা নিয়ে আসলো তখন অবশ্যই ব্যবহারকারীদের ফেসবুক আপডেট করতে হয়েছে। এখন আপনি যদি ফেসবুক অ্যাপটি আপডেট না করেন তবে আপনি টেক্সট কপি করার সেই সুবিধাটা পাবেন না বটে কিন্তু আপনি ফেসবুক ঠিকই চালাতে পারবেন, আপনার সব কাজই চলবে। 

আবার কিছু কিছু অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যেগুলো আপডেট না করলে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব এই অ্যাপ্লিকেশন গুলো অনেক বেশি পুরাতন হয়ে গেলে আপনি যতক্ষণ আপডেট না দিবেন ততক্ষণ অ্যাপ ওপেন করতে পারবেন না। 

এক্ষেত্রে অটো আপডেট চালু রাখলেও এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন গুলোকে ম্যানুয়ালি আপডেট করে নিতে হবে। তাই বলা যায়, আসলে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি অটো আপডেট বন্ধ করবেন অথবা চালু রাখবেন।

Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করার উপায় 

যাইহোক চলুন জেনে নেওয়া যাক প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশন এর অটো আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে। কয়েকটি ধাপে আমরা পুরো বিষয়টি লক্ষ্য করতে পারি।
প্রথমে আপনার এন্ড্রয়েড ফোনের প্লে স্টোর অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করুন। অবশ্যই ডেটা কানেকশন অথবা ওয়াইফাই সংযোগ থাকতে হবে।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

এরপর প্লে স্টোর এপ্লিকেশন ওপেন হওয়ার পর স্ক্রিনের উপরে ডান দিকে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

এরপর Manage apps & device এ ক্লিক করুন।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

এরপর See details এ ক্লিক করুন। এরপরের পেজে আপনার ডিভাইসে ইন্সটল কৃত প্রত্যেকটি অ্যাপ্লিকেশন এর লিস্ট দেখাবে। অ্যাপ এর এ লিস্ট থেকে প্রত্যেকটি অ্যাপ আলাদা আলাদা ভাবে অটো আপডেট বন্ধ করতে হবে।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

যেকোনো একটি এপ্লিকেশনের উপরে ক্লিক করুন। এরপর স্ক্রিনের উপরে ডান দিকে থাকা “থ্রি ডট” অপশনের উপর ক্লিক করুন।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

এরপর দেখা যাবে Enable auto update এ টিক চিহ্ন দেয়া আছে। কোন অ্যাপ্লিকেশনের অটো আপডেট বন্ধ করতে চাইলে এই টিক চিহ্নটি তুলে দিতে হবে অর্থাৎ টিক চিহ্নর উপর ক্লিক করুন। ব্যাস অটো আপডেট বন্ধ হয়ে গেল। এভাবে প্রত্যেকটি অ্যাপ্লিকেশন এর টিক চিহ্ন তুলে দিলেই সবগুলো অ্যাপ্লিকেশনে অটো আপডেট বন্ধ হয়ে যাবে।
Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

Play Store থেকে অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করবেন কিভাবে

তবে প্রয়োজন অনুসারে যে কোন অ্যাপ্লিকেশন ম্যানুয়ালি আপডেট করে নিবেন।

ক্যাশে কি? এর সুবিধা এবং অসুবিধা

আমাদের ডিভাইস গুলোর স্টোরেজ বৃদ্ধি করার একটি সহজ পদ্ধতি হলো ক্যাশে ডিলিট করা। কিভাবে ক্যাশে ডিলিট করা যায় সেটি জানার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন ক্যাশে আসলে কি? ইংরেজিতে শব্দটি হল Cache এবং বাংলায় এটির উচ্চারণ ক্যাশে বা ক্যাশ। এটির উৎপত্তি এবং এটি ব্যবহৃত হয় মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের জন্য। 

অনেকেই হয়তো একটি বিষয় খেয়াল করে থাকবেন আপনি যখন কোন একটি ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন প্রথমবার ভিজিট করতে আপনার অনেক সময় লাগলেও দ্বিতীয়বার ভিজিট করার বেলায় কিন্তু সময় অনেক কম লাগে। এর কারণ হলো প্রথমবার ভিজিট করার সময় সেই ওয়েবসাইট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য, ছবি, টেক্সট, ভিডিও সহ অন্যান্য তথ্য আপনার ডিভাইসে কপি করে জমা রাখা হয়। 

এবং দ্বিতীয়বার সেই একই ওয়েব সাইটে ভিজিট করার সময় পূর্বের কপি করা তথ্যগুলোকে পুনরায় রিস্টোর করার ফলে সময় অনেক কম লাগে। ওয়েবসাইট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আপনার ডিভাইসে জমা রাখার এই সিস্টেমটিকে বলা হয় ক্যাশে।

ব্যবহারকারীর জন্য ক্যাশের সুবিধা এবং অসুবিধা

পৃথিবীতে কোন জিনিসই শুধু সুবিধা নেই অথবা শুধু অসুবিধা নেই। তাই ক্যাশে যেহেতু সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্যবহারের সাথে সম্পৃক্ত তাই এখানেও কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। আগেই বলা হল ক্যাশের কারণে ব্যবহারকারী কম সময়ে একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন ফলে ব্যবহারকারীর সময় বাঁচে।

আরও পড়ুন

এবার আসা যাক অসুবিধার কথায়। আপনি যত বেশি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন আপনার ডিভাইসে তত বেশি পরিমাণ ক্যাশে জমা হতে থাকবে। জমতে জমতে একটা পর্যায়ে আপনার স্মার্টফোন বা যেকোনো ডিভাইসের স্টোরেজ পূর্ণ হতে থাকবে অর্থাৎ মেমোরি কমতে থাকবে। এর ফলে আপনার স্মার্টফোনের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় ব্যাঘাত ঘটবে।

তাই লোডিং সমস্যা কম হবার পরেও স্মার্টফোনের কার্যকারিতার কথা বিবেচনা করে মাসে অন্তত একবার ক্যাশে পরিষ্কার করা উচিত।

ক্যাশে এবং কুকিজ কি একই?

না ক্যাশে এবং কুকি একই জিনিস নয়। কাজের ধরন কিছুটা এক হলেও এ দুটির মধ্যে বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। ক্যাশে সংরক্ষণ করে রাখে ওয়েবসাইট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেমন ছবি, টেক্সট, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি। আর কুকিজ সংরক্ষণ করে রাখে ব্যবহারকারীর সকল তথ্য যেমন লগইন তথ্য, নাম, ঠিকানা ইত্যাদি।

কুকিজের সুবিধা এবং অসুবিধা

কুকিজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সকল তথ্য সঞ্চয় করে রাখা যায় ফলে এতে একজন ওয়েবসাইটের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিক জানতে পারে তার ওয়েবসাইটে কি ধরনের ভিজিটর প্রবেশ করছে, তাদের চাহিদা কেমন, তাদের পছন্দ-অপছন্দ গুলো কি কি ইত্যাদি। আবার কুকিজ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের মালিক ব্যবহারকারীর চাহিদা বা পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারে।

আবার যেহেতু কুকিজ ব্যবহারকারীর সকল তথ্যই ট্র্যাক করে রাখতে পারে তাই কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারীর তথ্য নিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে পারে অথবা ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।

তাই এই ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হল- কিছু কিছু ওয়েবসাইট আছে আপনার তথ্য জানতে চায় অথবা নোটিফিকেশন পাঠাতে চায় অথবা কুকিজ ব্যবহার করতে চায়। তাদেরকে এই ধরনের পারমিশন না দেয়া।

ক্যাশে পরিষ্কার করার পদ্ধতি জেনে নিন

আপনার ডিভাইস থেকে ক্যাশে পরিষ্কার করার পদ্ধতি গুলো কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করা যায়।

প্রথমে ডিভাইসের সেটিংস অপশনে গিয়ে অ্যাপস বাটনে ক্লিক করতে হবে।

এরপর See all apps এ ট্যাপ করুন।



এরপর আপনার ডিভাইসে ইন্সটলকৃত সকল অ্যাপ্লিকেশন এর লিস্ট দেখা যাবে। যেকোনো একটি অ্যাপ্লিকেশনে ট্যাপ করুন।

এরপর Storage & cache তে ট্যাপ করুন।

এরপর Clear cache তে ট্যাপ করুন। এভাবে প্রতিটি অ্যাপ্লিকেশন থেকে ক্যাশে ডিলিট করে আপনার স্টোরেজকে বাড়িয়ে তুলুন।



শেষ কথা

আজকের এ লেখার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল গুগল প্লে স্টোর থেকে অটো আপডেট বন্ধ করা এবং ক্যাশে পরিষ্কার করা। আসলে দুটো কাজই একদমই সহজ। শুধুমাত্র সময় নিয়ে করতে পারলে আমাদের ডিভাইসের স্টোরেজ বাড়ার ফলে ডিভাইসের কার্যকারিতা বেড়ে যাবে এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজ করা সহজতর হবে।
যারা জানতেন না তারা আজকের লেখা থেকে নতুন কিছু হলেও শিখলেন। আপনাদের উপকারে আসলে আমার এই লেখাটি সার্থক। পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url