সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ | অপরাধের তদন্ত ও বিচার
বর্তমান স্মার্ট যুগে আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করি তারা সবাই কমবেশি সাইবার ক্রাইম বিষয়টির সাথে পরিচিত। সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের জন্যই বাংলাদেশ সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ প্রণয়ন করেছে।
সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এ মোট নয়টি অধ্যায় রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে সর্বমোট ৬০ টি ধারা। আজকের এই লেখায় আমরা জানবো শুধুমাত্র সপ্তম অধ্যায়ের ১৫ টি ধারা অর্থাৎ কেউ সাইবার অপরাধ করে ফেললে তার অপরাধের তদন্ত এবং বিচারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া। আশা করি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ে আমরা সবাই সচেতন হতে পারব।
তদন্ত, ইত্যাদি
৩৮। তদন্তকারী ব্যক্তি হিসেবে
(১) পুলিশ অফিসার, অতঃপর এই অধ্যায়ে তদন্তকারী অফিসার বলে উল্লিখিত, এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধ তদন্ত করবেন।(২) উপ-ধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো মামলার প্রারম্ভে বা তদন্তের যে কোনো পর্যায়ে যদি প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটি তদন্ত দল গঠন করা প্রয়োজন, তাহলে ট্রাইব্যুনাল বা সরকার আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে এবং শর্তে, তদন্তকারী সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং এজেন্সি এর সমন্বয়ে একটি যৌথ তদন্ত দল গঠন করতে পারবে।
তদন্তের সময়সীমা, ইত্যাদি
৩৯। (১) তদন্তকারী অফিসার-
(ক) কোনো অপরাধ তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্তির তারিখ হতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করবেন;(খ) দফা (ক) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে তিনি, তার নিয়ন্ত্রণকারী অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে, তদন্তের সময়সীমা অতিরিক্ত ১৫ (পনেরো) দিন বৃদ্ধি করতে পারবেন;(গ) দফা (খ) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো তদন্ত কার্য সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে তিনি এর কারণ লিপিবদ্ধ করে বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করবেন, এবং ট্রাইব্যুনালের অনুমতিক্রমে, পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন তদন্তকারী অফিসার কোনো তদন্ত কার্য সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে ট্রাইব্যুনাল তদন্তের সময়সীমা, যুক্তিসঙ্গত সময় পর্যন্ত, বৃদ্ধি করতে পারবে।
তদন্তকারী অফিসারের ক্ষমতা
৪০। (১) এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী অফিসারের নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা থাকবে, যথা:-
(ক) কম্পিউটার, কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা কোনো ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা কোনো প্রোগ্রাম, তথ্য-উপাত্ত যা কোনো কম্পিউটার বা কম্প্যাক্ট ডিস্ক বা রিমুভেবল ড্রাইভ বা অন্য কোনো উপায়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে তা নিজের অধিকারে নেওয়া;(খ) কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট হতে তথ্য প্রবাহের (traffic data) তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ; এবং(গ) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্য সম্পাদন।
(২) এই আইনের অধীন তদন্ত পরিচালনাকালে তদন্তকারী অফিসার কোনো অপরাধের তদন্তের স্বার্থে যে কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি বা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন।
পরোয়ানার মাধ্যমে তল্লাশি ও জব্দ
৪১। যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে,-
(ক) এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা সংঘটিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে; বা(খ) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ সংক্রান্ত কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা এতদসংক্রান্ত সাক্ষ্য প্রমাণ কোনো স্থানে বা ব্যক্তির নিকট রক্ষিত রয়েছে, তাহলে, তিনি, অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করে, ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট আবেদনের মাধ্যমে তল্লাশি পরোয়ানা সংগ্রহ করে নিম্নবর্ণিত কার্য সম্পাদন করতে পারবেন,
(অ) কোনো সেবা প্রদানকারীর দখলে থাকা কোনো তথ্য-প্রবাহের (traffic data) তথ্য- উপাত্ত হস্তগতকরণ;(আ) যোগাযোগের যে কোনো পর্যায়ে গ্রাহক তথ্য এবং তথ্যপ্রবাহের তথ্য-উপাত্তসহ যে কোনো তারবার্তা বা ইলেকট্রনিক যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকরণ।
পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতার
৪২। (১) যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, কোনো স্থানে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হচ্ছে বা হবার সম্ভাবনা রয়েছে বা সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছে ফেলা, পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হবার বা করার সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে তিনি, অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করে, নিম্নবর্ণিত কার্য সম্পাদন করতে পারবেন,
(ক) উক্ত স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;(খ) উক্ত স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্যান্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ;(গ) উক্ত স্থানে উপস্থিত যে কোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি;(ঘ) উক্ত স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ করেছেন বা করছেন বলে সন্দেহ হলে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন তল্লাশি সম্পন্ন করার পর পুলিশ অফিসার তল্লাশি পরিচালনার রিপোর্ট ট্রাইব্যুনালের নিকট দাখিল করবেন।
তথ্য সংরক্ষণ
৪৩। (১) মহাপরিচালক, স্বীয় বিবেচনায়, বা তদন্তকারী অফিসারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, যদি এরূপে বিশ্বাস করেন যে, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেমে সংরক্ষিত কোনো তথ্য-উপাত্ত এই আইনের অধীন তদন্তের স্বার্থে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন এবং এইরূপ তথ্য-উপাত্ত নষ্ট, ধ্বংস, পরিবর্তন অথবা দুষ্প্রাপ্য করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে উক্ত কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেমের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উক্তরূপ তথ্য-উপাত্ত ৯০ (নব্বই) দিন পর্যন্ত সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।
(২) ট্রাইব্যুনাল, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, উক্ত তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণের মেয়াদ বর্ধিত করতে পারবে, তবে তা সর্বমোট ১৮০ (একশত আশি) দিনের বেশি হবে না।
কম্পিউটারের সাধারণ ব্যবহার ব্যাহত না করা
৪৪। (১) তদন্তকারী অফিসার এরূপভাবে তদন্ত পরিচালনা করবেন যেন কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা এর কোনো অংশের বৈধ ব্যবহার ব্যাহত না হয়।
(২) কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা এর কোনো অংশ জব্দ করা যাবে, যদি-
(ক) সংশ্লিষ্ট কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা এর কোনো অংশে প্রবেশ করা সম্ভব না হয়;(খ) সংশ্লিষ্ট কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা উহার কোনো অংশ অপরাধ প্রতিরোধ করার জন্য বা চলমান অপরাধ রোধ করার জন্য জব্দ না করলে তথ্য-উপাত্ত নষ্ট, ধ্বংস, পরিবর্তন বা দুষ্প্রাপ্য হবার সম্ভাবনা থাকে।
তদন্তে সহায়তা
৪৫। এই আইনের অধীন তদন্ত পরিচালনাকালে তদন্তকারী অফিসার কোনো ব্যক্তি বা সত্তা বা সেবা প্রদানকারীকে তথ্য প্রদান বা তদন্তে সহায়তার জন্য অনুরোধ করতে পারবেন এবং উক্তরূপে কোনো অনুরোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সত্তা বা সেবা প্রদানকারী তথ্য প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের গোপনীয়তা
৪৬। (১) তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তি, সত্তা বা সেবা প্রদানকারী কোনো তথ্য প্রদান বা প্রকাশ করলে উক্ত ব্যক্তি, সত্তা বা সেবা প্রদানকারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি আইনে অভিযোগ দায়ের করা যাবে না।
(২) এই আইনের অধীন তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, সত্তা বা সেবা প্রদানকারীর তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদির গোপনীয়তা রক্ষা করবেন।
(৩) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) ও (২) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহলে অনুরূপ লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, ইত্যাদি
৪৭। (১) ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, পুলিশ অফিসারের লিখিত রিপোর্ট ব্যতীত ট্রাইব্যুনাল কোনো অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ (cognizance) করবে না।
(২) ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন অপরাধের বিচারকালে দায়রা আদালতে বিচারের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির অধ্যায় ২৩ এ বর্ণিত পদ্ধতি, এই আইনের বিধানাবলির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, অনুসরণ করবে।
অপরাধের বিচার ও আপিল
৪৮। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ কেবল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচার্য হবে।
(২) কোনো ব্যক্তি ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে তিনি আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে পারবেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ
৪৯। (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকলে, কোনো অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও অন্যান্য বিষয়াদি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হবে।
(২) ট্রাইব্যুনাল, আপিল ট্রাইব্যুনাল ও, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পুলিশ অফিসার তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে, এই আইনের বিধানাবলীর সাথে সঙ্গতি রেখে নিম্নবর্ণিত বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩৯ নং আইন) এর অষ্টম অধ্যায়ের অংশ-২ ও অংশ-৩ এর বিধানাবলি অনুসরণ করবে, যথা:-
(ক) ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচার পদ্ধতি;(খ) রায় প্রদানের সময়সীমা;(গ) দণ্ড বা বাজেয়াপ্তকরণ সংক্রান্ত বিষয়ে অন্য কোনো শাস্তি প্রদানে বাধা না হওয়া;(ঘ) প্রকাশ্য স্থান, ইত্যাদিতে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষমতা;(ঙ) তল্লাশির পদ্ধতি; এবং(চ) আপিল ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার ও আপিল শ্রবণ ও নিষ্পত্তির পদ্ধতি।(৩) ট্রাইব্যুনাল ফৌজদারি কার্যবিধির অধীন আদি এখতিয়ার প্রয়োগকারী দায়রা আদালতের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ, প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি
৫০। (১) ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল, বিচারকার্য পরিচালনাকালে, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ডিজিটাল ফরেনসিক, ইলেকট্রনিক যোগাযোগ, ডাটা সুরক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির মতামত গ্রহণ করতে পারবে।
(২) সরকার বা এজেন্সি এই আইন বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে, প্রয়োজনে, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ডিজিটাল ফরেনসিক, ইলেকট্রনিক যোগাযোগ, ডাটা সুরক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে পারবে।
মামলা নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত সময়সীমা
৫১। (১) ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই আইনের অধীন কোনো মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ হতে ১৮০ (একশ আশি) কার্য দিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করবেন।
(২) ট্রাইব্যুনালের বিচারক উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হইলে, তিনি এর কারণ লিপিবদ্ধ করে উক্ত সময়সীমা সর্বোচ্চ ৯০ (নব্বই) কার্য দিবস বৃদ্ধি করতে পারবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের বিচারক কোনো মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, তিনি তার কারণ লিপিবদ্ধ করে বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে হাইকোর্ট বিভাগকে অবহিত করে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখতে পারবেন।
অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা
৫২। এই আইনের-
(ক) ধারা ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩২ এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য ও অ-জামিনযোগ্য হবে;(খ) ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), ধারা ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৪৬ এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হইবে; এবং(গ) ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক)-তে উল্লিখিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে আপোষযোগ্য হবে।
বাজেয়াপ্তি
৫৩।
(১) এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে, যে কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ফ্লপি ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক, টেপ-ড্রাইভ বা অন্য কোনো আনুষঙ্গিক কম্পিউটার উপকরণ বা বস্তু সম্পর্কে বা সহযোগে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেইগুলি ট্রাইব্যুনালের আদেশানুসারে বাজেয়াপ্তযোগ্য হবে।(২) উপ-ধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি ট্রাইব্যুনাল এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, যে ব্যক্তির দখল বা নিয়ন্ত্রণে উক্ত কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ফ্লপি ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক বা অন্য কোনো আনুষঙ্গিক কম্পিউটার উপকরণ পাওয়া গেছে তিনি উক্ত উপকরণ সংশ্লিষ্ট অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী নন, তাহলে উক্ত কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ফ্লপি ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক, টেপ ড্রাইভ বা অন্য কোনো আনুষঙ্গিক কম্পিউটার উপকরণ বাজেয়াপ্তযোগ্য হবে না।(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন বাজেয়াপ্তযোগ্য কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ফ্লপি ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক, টেপ ড্রাইভ বা অন্য কোনো আনুষঙ্গিক কম্পিউটার উপকরণের সাথে যদি কোনো বৈধ কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ফ্লপি ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক, টেপ ড্রাইভ বা অন্য কোনো কম্পিউটার উপকরণ পাওয়া যায়, তাহলে সেইগুলিও বাজেয়াপ্তযোগ্য হবে।(৪) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো অপরাধ সংঘটনের জন্য যদি কোনো সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার কোনো কম্পিউটার বা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো উপকরণ বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটা বাজেয়াপ্তযোগ্য হবে না।
তথ্যসূত্র: ল’জ অব বাংলাদেশ
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url