বিভিন্ন মসলার উপকারিতা
মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন সেমাই, পায়েস অথবা রিচ ফুড যেমন মোরগ পোলাও, কাচ্চি বিরানি, তেহারি অথবা সাধারণ খাবার যেমন ভাত, মাছ, মাংস, ডাল - যেকোনো খাবারের কথাই ধরেন না কেন মসলা ছাড়া রান্না অসম্ভব। তাই রান্না কে সুস্বাদু করার জন্য মসলার ব্যবহার অপরিহার্য। কিন্তু বিভিন্ন মসলার স্বাদ এবং সুগন্ধ বৃদ্ধি করা ছাড়াও যে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই হয়ত ধারনা নেই। আজকের লেখায় আমরা জানবো বিভিন্ন মসলার উপকারিতা সম্পর্কে।
"সচেতনতা" এর আজকের এই লেখায় বিভিন্ন মসলার উপকারিতা এবং স্বাস্থ্য গুণাগুণ নিয়ে আলোচনা করব। বেশ কিছু তথ্য জানতে আশা করি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
মসলা
যে কোন খাবারে বিশেষ করে তরকারিতে স্বাদ, রং এবং সুগন্ধ বৃদ্ধির জন্য যে উপাদান সমূহ নিয়মিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেগুলোকে মসলা বলা হয়। বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত এ মসলাগুলো হয়ে থাকে উদ্ভিদের বাকল, ছাল, শেকড়, ফল, পাতা, বীজ ইত্যাদি। যে কোন মসলা সরাসরি কাঁচা কেটে অথবা বেটে অথবা গুঁড়ো করে ব্যবহার করা যায়।
তবে যিনি রান্না করবেন তিনি তার পছন্দ মত এবং প্রয়োজন মত যে কোন উপায়ে মসলা ব্যবহার করতে পারেন। যে কোন মহাদেশের তুলনায় আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশে মসলার ব্যবহার তুলনামূলকভাবে বেশি।
বাংলাদেশে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে’র অধীনে “মসলা গবেষণা কেন্দ্র” রয়েছে যেটি বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের মহাস্থানগড়ের ঠিক পাশেই অবস্থিত।
গুঁড়া মশলা কি ক্ষতিকর?
যেকোনো রান্নায় মসলা আসলে দুই ভাবে ব্যাবহার করা যায় কাঁচা এবং গুঁড়া মসলা। তবে আমাদের দেশে গুঁড়া মশলার প্রচলন বেশি। শহরের জীবনে মানুষের সময় কম তাই গুঁড়া করার সময়ের অভাবের কারণে বাজার থেকে প্রস্তুতকৃত গুড়া মশলার প্যাকেট কিনেই রান্না করতে হয়। তবে গ্রামের দিকে এখনো খুব অল্প পরিশরে হলেও কাঁচা মশলার ব্যবহার দেখা যায়।
প্রকৃতপক্ষে কাঁচা মসলার স্বাদ অতুলনীয়। কাঁচা মসলা বলতে যেটি তাৎক্ষণিকভাবে কেটে বা বেটে তরকারিতে ব্যবহার করা হয়। তবে গুড়া মসলা ব্যবহারে খুব বেশি সচেতন হতে হবে। কারণ বর্তমানে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গুড়া মশলার ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে সেগুলোকে লোভনীয় রং এবং গন্ধে পরিণত করে বেশি দামে বিক্রি করে।
তারা গুড়া মসলায় কাপড়ে দেয়া বিভিন্ন রং, ইট ও কাঠের গুড়া, সিসা বা লেড, ধানের তুষ, বাসি আটা বা ময়দা ইত্যাদি মিশিয়ে মসলার গুনাগুন নষ্ট করে ফেলে। একই সাথে এসব বিষাক্ত পদার্থ মেশানোর ফলে এই মসলাগুলো আমাদের শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।
স্বাস্থ্যকর মসলা খেতে কি করা উচিত
বাজারে যেহেতু ভেজাল মসলার গুড়া পাওয়া যায় আবার অনেক ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোঝে ওঠা সম্ভব হয় না যে এটি আসল নাকি ভেজাল মসলার গুঁড়া। তাই এ সমস্যা এড়াতে আমাদের সকলেরই উচিত কাঁচা মসলা কেটে বা বেটে তৎক্ষণিক রান্না করা। অথবা হলুদ, তেজপাতা, এলাচ, লবঙ্গ ইত্যাদির মত মসলাগুলো বাজার থেকে গোটা কিনে বাসায় শুকিয়ে কোন মিলে গিয়ে গুড়া করে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিভিন্ন মসলার উপকারিতা
নিচে বেশ কিছু জনপ্রিয় এবং পরিচিত মসলার নাম দেয়া হলো চলুন জেনে নেয়া যাক এসব বিভিন্ন মসলার উপকারিতা এবং স্বাস্থ্যগুণ।
আদা
ব্যাপক পরিচিত আদা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার সমাধান করে, হজম প্রক্রিয়া সচল রাখে, অরুচি দূর করে। কাশি উপশমে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে জাদুর মত কাজ করে।
পেঁয়াজ
ঠান্ডা জনিত কারণে মাথাব্যথা ভালো করে পেঁয়াজ। বমি বমি ভাব দূর করতে পেঁয়াজের রস খুবই উপকারী। অল্প পরিমাণ পানির সাথে পেঁয়াজের কয়েক ফোটা রস মিশিয়ে খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়। তাছাড়া পেয়াজ এন্টি ব্যাকটেরিয়াল হওয়ায় যে কোন সামান্য কাটা ছেড়াই পেঁয়াজের রস ওষুধের মত কাজ করে।
গোলমরিচ
এন্টিবায়োটিকের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবেও কাজ করে গোলমরিচ। তাছাড়া গোলমরিচে ভিটামিন সি থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
মরিচ
মরিচ ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস হওয়ায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, বিষন্নতা দূরীকরণ, মাথাব্যথা দূরীকরণ সহ বেশ কিছু কাজে উপকার করে থাকে মরিচ।
রসুন
যেকোনো তরকারির একটি অপরিহার্য মসলার নাম রসুন। ঠান্ডা ও কাশি দূর করতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও রসুনের রয়েছে কার্যকরী ভূমিকা। রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিহত করতে, কোলেস্টেরল কমাতে রসুন উপকারী।
বিয়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা | সন্তানদের সঠিক সময়ে বিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ন কেন?
ধনে
হলুদ রসুন এর মধ্য ধনেরও বেশ কিছুক্ষণ রয়েছে। যেমন কোলেস্টেরল কমানো, রক্তে সুগারের মাত্রা কমানো, হজমে সাহায্য করা ইত্যাদি।
লবঙ্গ
খাদ্যনালী ও গলার প্রদাহ দূর করার পাশাপাশি শ্বাসনালীর বিভিন্ন ব্যথা উপশমে লবঙ্গ বেশ কার্যকরী। তাছাড়া সর্দি-কাশি দূর করতেও ওষুধের মত কাজ করে লবঙ্গ।
হলুদ
মসলা হিসেবে ব্যবহারের দিক দিয়ে অতিমাত্রায় সাধারণ এবং সহজলভ্য কিন্তু গুণাবলীর দিক দিয়ে অতুলনীয় হলুদ। হলুদ এন্টি প্রদাহ এবং এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের পাশাপাশি জ্বর উপশমে দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে বেশ কার্যকরী ফল পাওয়া যায়। রক্তকে পাতলা করে রক্ত চলাচলের পথকে সহজ করে। হার্টে ব্লক তৈরিতে বাধা প্রদান করে হলুদ।
জোয়ান
নাক বন্ধ, শ্বাসনালীর প্রদাহ, সর্দি, ফ্লু, পেট ফাঁপা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে কেরাম সিড বা জোয়ানের জুড়ি নেই।
জায়ফল
হজম প্রক্রিয়ার ত্বরান্বিত করতে, পেটের গ্যাস বা ফাঁপা কমাতে, ত্বকের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করতে, বিভিন্ন ফাংগাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হিরোর মত ভূমিকা পালন করে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জায়ফল।
মৌরি
বিভিন্ন গুরুপাক খাবার বিশেষ করে চর্বি হজমে সহায়তার পাশাপাশি ইউরিক এসিড কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে মৌরি। তাছাড়াও এটি পেট ফাঁপা কমানোর জন্য বিশেষ সুপরিচিত।
তেজপাতা
দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোগ দূর করতে, এলার্জি সমস্যা কমাতে, ঘামাচি দূর করার জন্য, অরুচি বা মুখের তিতা ভাব দূর করতে, শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে তেজপাতা দারুন কার্যকরী।
কেওড়া
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো, অতিরিক্ত গ্যাস দূর করা, খাবার হজম করার সাথে সাথে কেওড়া পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এর মত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে থাকে আমাদের শরীরে।
আসল-নকল টাকা চেনার উপায়- জাল টাকা পেলে করণীয়
দারুচিনি
ডায়াবেটিস প্রতিরোধের পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন এনজাইম নিঃসরণ করে শরীরে অনেক বিপাকীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন ফ্লু এবং সর্দির বিরুদ্ধেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে দারুচিনি। ক্যান্সার প্রতিরোধে, বুদ্ধি বিকাশে, হাড় গঠনে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে দারুচিনি সাহায্য করে।
এলাচ
কেওড়ার মত এলাচও নি, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ, আইরন, পটাশিয়াম এর মত বেশ কিছু খনিজ ও ভিটামিন উপাদান সরবরাহ করে আমাদের শরীরে। তাছাড়া আরও বেশ কিছু সুবিধার মধ্যে রয়েছে এলাচ হজমে সাহায্য করে, রক্তচাপ কমায় এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।
জিরা
এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জিরা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার, হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন করার ক্ষমতা রয়েছে। পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সক্ষম জিরা।
মেথি
ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের পরিমান নিয়ন্ত্রণের গুরু দায়িত্ব পালন করে মেথি। পরিপাকতন্ত্রতে গ্লুকোজের শোষণও করে থাকে এটি। তাছাড়া কোলেস্ট্রলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান করে এবং হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন করে মেথি।
জয়ত্রী
শরীরের শিরা এবং ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যৌন কামনা তৈরি করা, পেট ফাঁপা বা পেটের গ্যাস দূর করা, হজমে সাহায্য করা, চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করা - এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে থাকে জয়ত্রী।
সরিষা
বিভিন্ন সবজি এবং ইলিশ মাছ মসলা হিসেবে সরিষা দিয়ে রান্না করলে স্বাদ যেমন দ্বিগুণ বেড়ে যায় ঠিক তেমনি অজান্তে আমাদের শরীরের বেশ কিছু উপকার সাধন করে থাকে সরিষা। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ সরিষা বীজ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সরিষা বীজ সাধারণ সর্দি কাশি থেকে দূরে রাখে।
১৫ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ৫ স্মার্টফোন ২০২৪
জাফরান
হরমোনের বিভিন্ন কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি জাফরান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও ভূমিকা রাখে।
তেতুল
তেতুলের বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। তরকারিতে শুধু মসলা হিসেবেই নয় তেতুলের চাটনিও খুব জনপ্রিয়। তেতুলের বিশেষ গুণ আছে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করতে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে, হাড়কে শক্তিশালী করতে, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা সমাধান করতে।
কালোজিরা
কালোজিরায় বিদ্যমান থাইমোকিনোন উপাদান ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে বিশেষ সহায়তা করে। হৃদ রোগের যোগী কমাতে কালোজিরা বেশ কার্যকরী। তাছাড়া নতুন চুল গজাতে কালোজিরার বিশেষ গুণ রয়েছে।
তিল
দিলে বিদ্যমান লীগ নানো উপাদানটি যকৃতের কার্যকারিতা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেহের বিভিন্ন বিপাকক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।
অতিরিক্ত মসলা কি ক্ষতিকর?
এক কথায় বলা যেতে পারে, হ্যাঁ, অতিরিক্ত মসলা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত যে কোন কিছুই শরীরের জন্য ক্ষতিকর, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মসলাও আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর হতে পারে না। যেকোনো তরকারিতে পরিমিত এবং প্রয়োজনমতো মসলা দিলে স্বাদ হওয়ার জন্য সেটি যথেষ্ট। তবে অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত স্বাদ করার জন্য অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করে থাকেন। তখন অতিরিক্ত মসলার কারণে সেই সবজি বা তরকারির পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
শেষ কথা
আমরা বাঙালিরা ভোজন রসিক মানুষ। পুষ্টিগণের চেয়ে স্বাদের কথাই আমরা বেশি বিবেচনা করি। তাই মসলা ছাড়া তরকারি খাওয়া আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তরকারির পুষ্টিগুণ এবং মসলার পুষ্টিগুণের কথা বিবেচনা করেই আমরা খাবারের সাথে পরিমিত পরিমাণে মসলা ব্যবহার করব।
আরও জানুনঃ ডেঙ্গু রোগের কারণ- লক্ষণ এবং করণীয়
বিভিন্ন মসলার উপকারিতা কথা জানানোর চেষ্টা করলাম। আশা করি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। ভালো লাগলে প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করবেন আর নতুন কোন বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url