হেপাটাইটিস বি কেন হয়- লক্ষণ ও প্রতিকার
বর্তমানে হেপাটাইটিস বি একটি মারাত্মক রোগ। আমরা হেপাটাইটিস বি এর নাম অনেকেই শুনেছি তবে হেপাটাইটিস বি কেন হয়, এর লক্ষণ, প্রতিকার এসব বিষয়ে আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা বা অনেকে আবার জানার চেষ্টা করি।
"সচেতনতা" এর আজকের এই লেখায় হেপাটাইটিস বি সম্পর্কিত বিস্তারিত যেমন হেপাটাইটিস বি কেন হয়, হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ এবং হেপাটাইটিস বি এর প্রতিকার সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করি উপকৃত হবেন তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
হেপাটাইটিস বি
যকৃত বা লিভারে প্রদাহ হয় হেপাটাইটিস নামক ভাইরাসের কারণে। এই হেপাটাইটিস ভাইরাস পাঁচ রকম হয়ে থাকে যথা হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি এবং হেপাটাইটিস ই। পাঁচটির মধ্যে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভয়ানক মারাত্মক ক্ষতিকর ভাইরাস। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের আক্রমণে যকৃতে বা লিভারে প্রদাহ হয়, সেটিকে বলা হয় হেপাটাইটিস বি রোগ।
আরও জানুনঃ রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে যা খেতে পারেন
হেপাটাইটিস বি ভাইরাসকে মারাত্মক বলার কারণ হচ্ছে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথে শরীরে কোন ধরনের উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় না। ধীরে ধীরে যত দিন যাবে ততই শরীরে এর অবস্থান শক্ত হতে থাকবে এবং এমন একটা সময় এটির উপস্থিতি বোঝা যাবে যখন চিকিৎসা অনেকটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
রক্ত পরীক্ষা করার পর রক্তে যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় তবে সেটিকে বলা হয় হেপাটাইটিস বি পজেটিভ। অর্থাৎ ব্যক্তি হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত। আর যদি রক্তে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার না যায় তবে সেটিকে বলা হয় হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ।
হেপাটাইটিস বি এর প্রকারভেদ
হেপাটাইটিস বি মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে।
একিউট বা স্বল্পমেয়াদি হেপাটাইটিস বি:
এই ধরনের হেপাটাইটিস বি দ্বারা কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হলে অল্প কিছুদিন এই রোগে ভুগে থাকে এবং রোগীর তীব্র যন্ত্রণা কষ্ট হয়। রোগীর সুস্থ হতেও কম সময় লাগে।
ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস বি:
এই ধরনের হেপাটাইটিস বি দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রাথমিক অবস্থায় অনুধাবন করতে পারে না যে তার শরীরে অবস্থান করছে। কারণ তখন তার শরীরে হেপাটাইটিস রোগের কোন লক্ষণই প্রকাশ পায় না। লক্ষণ প্রকাশ পেতে প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস সময় লেগে যায়। এরপর পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ক্রনিক হেপাটাইটিস বি ধরা পড়লে রোগীকে সুস্থ করতে অনেকদিন চিকিৎসা করতে হয়। এজন্য এটিকে ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস বি বলা হয়।
হেপাটাইটিস বি কেন হয়
হেপাটাইটিস বি হওয়ার মূল কারণ হলো হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস মারাত্মক সংক্রামক একটি জীবাণু। বি ভাইরাস সহজে সংক্রামিত অর্থাৎ বিভিন্ন মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে মানব সৃষ্ট কিছু কারণ বা পরিস্থিতির কারণে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক হেপাটাইটিস বি কেন হয়।
- কাউকে রক্ত প্রদানের সময় বা নিজের জন্য কোন টেস্ট করার সময় একই সুচ বা সিরিঞ্জ দিয়ে অনেকবার রক্ত দেয়া নেয়া করলে শরীর থেকে রক্তের মাধ্যমে সহজেই একটি সুস্থ শরীরে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।
- হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মা সন্তান প্রসব করলে সেই সন্তানের হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
- আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিচ্ছন্ন সামগ্রী যেমন টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, রেজার, খুর ইত্যাদি অন্যের সাথে শেয়ার করলে সহজে বি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা বি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন কারণ তারা মুখের লালা, যোনি রস, বীর্য, রক্ত, মূত্র সহ অন্যান্য তরলের সংস্পর্শে থাকেন।
- সমকামিতা এবং অসুরক্ষিত যৌন মিলন হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এ সংক্রমিত হওয়ার অন্যতম কারণ।
- অনেক সময় চিকিৎসা সামগ্রী নিরাপদ হলেও রক্ত যদি অনিরাপদ অর্থাৎ হেপাটাইটিস বি সংক্রমিত হয়ে থাকে তবে সে ক্ষেত্রেও একজন ব্যক্তি বি-ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
- শরীরে বিভিন্ন ছিদ্র যেমন নাক ফোড়ানো বা কান ফোঁড়ানো, ট্যাটু আঁকা, উলকি আঁকা এসব কাজে সতর্কতা অবলম্বন না করলে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- শল্য চিকিৎসা অর্থাৎ সার্জারির সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি যদি যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করা না হয় সেই ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- বিভিন্ন মাদক সেবনকারী ব্যক্তিরা সহজেই বি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে কারণ একই সুচ বা সিরিঞ্জ তারা অনেকজন অনেক বার ব্যবহার করেন।
হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সাথে সাথে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এমনকি ৩-৪ মাস পর্যন্ত এই ভাইরাসের উপস্থিতি বোঝার জন্য শরীরে কোন লক্ষণই বোঝা যায় না। তবে শরীরে বি ভাইরাসের উপস্থিতির সময় যত বাড়বে ধীরে ধীরে কিছু লক্ষণ প্রাথমিকভাবে প্রকাশ পাবে। যেমন -
- শরীর সবসময় ক্লান্ত লাগা
- হাড়ের জয়েন্টে এবং পেশীতে ব্যথা হওয়া
- ত্বক বিশেষ করে চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া যেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে জন্ডিস বলে।
- মাঝে মাঝেই জ্বর থাকা
- ক্ষুধা লাগে না এবং খাবারে অরুচি দেখা দেয়
- প্রস্রাব হলদে ভাব হয়ে যায়
- মাঝে মাঝে বমি বমি লাগে আবার কখনো বমি করে ফেলা
হেপাটাইটিস বি এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ
হেপাটাইটিস বি এর প্রতিকারের কথা বলতে গেলে স্থায়ী এবং অস্থায়ী দুইভাবে হেপাটাইটিস বি কে প্রতিরোধ করা সম্ভব। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি স্থায়ীভাবে প্রতিরোধ সম্ভব। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আপনার যদি হেপাটাইটিস বি কখনো না হয়ে থাকে তবে যে কোন সময় যে কোন বয়সে টিকা নিতে পারেন। এটি ১০০% সুরক্ষা দেয়।
তবে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে যদি নির্দিষ্ট করা হয় যে আপনি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন সে ক্ষেত্রে টিকার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ এই অবস্থায় টিকা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের বিরুদ্ধে তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে না।
নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। তবে অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়ে কি সচেতন আছেন?অস্থায়ীভাবে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে পরবর্তী জীবন যাপন করতে হবে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণের ফলে হেপাটাইটিস বি থেকে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে। যেমন-
- পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খেতে হবে
- নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে
- ধুমপান মদ্যপান সহ যাবতীয় নেশা বন্ধ করতে হবে
- যেকোনো সার্জারি, দাঁতের চিকিৎসা এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা নেওয়ার পূর্বে নিশ্চিত হতে হবে সরঞ্জামগুলো নিশ্চিতভাবে জীবনে মুক্ত করা হয়েছে কিনা
- জাঙ্ক ফুড বা ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
- রক্তদান বা গ্রহণের সময় নিশ্চিত হতে হবে সুচ বা সুই নতুন। প্রয়োজনে নিজেকে নতুন সিরিঞ্জ কিনে নিতে হবে।
- নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যেমন রেজার, ব্রাশ, টুথপেস্ট ইত্যাদি অন্যের সাথে শেয়ার না করা।
- অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করতে হবে এবং লাল মাংস না খাওয়া উত্তম।
- যৌন মিলনে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে।
হেপাটাইটিস বি এর ঝুঁকি
একজন ব্যক্তির দীর্ঘদিন যাবত হেপাটাইটিস বি সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ফলে নিজের জীবনের হুমকির সাথে সাথে অন্যদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। যেমন-
- বহুদিন ধরে বি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার এর কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে।
- দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের আক্রমণ লিভার ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যায়।
- আর এভাবে চলতে থাকলে জীবনের হুমকি দেখা দেয়। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- বি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি সমাজের অন্য সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে ফেলে।
হেপাটাইটিস বি সম্পর্কে কিছু তথ্য
- স্বাভাবিক যোগাযোগ বা মেলামেশায় যেমন আলিঙ্গন, জামাকাপড় শেয়ার, খাবার পাত্র শেয়ার করার মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ছড়ায় না।
- প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনার পর পুনরায় হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- একিউট বা তীব্র হেপাটাইটিস বি একটি অল্প সময়ের জন্য অসুস্থতা। কিন্তু ক্রনিক হেপাটাইটিস বি একটি দীর্ঘ সময়ের অসুস্থতা যা প্রায় ছয় মাস বা তার বেশিও থাকতে পারে এবং এক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করে।
- গর্ভাবস্থায় প্রতি দুই মাস পর পর হেপাটাইটিস বি টেস্ট করা উচিত। এতে করে গর্ভের সন্তান বি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।
- সাধারণত একিউট হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণের জন্য তেমন কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না তবে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের জন্য বিভিন্ন এন্টিভাইরাল ওষুধের প্রয়োজন হয়।
হেপাটাইটিস বি হলে কি কি সমস্যা হতে পারে
হেপাটাইটিস বি এর উপসর্গ বা লক্ষণ আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। আসুন আমার জেনে নেই আক্রান্ত হওয়ার পরে একজন মানুষের শরীরে হেপাটাইটিস বি এর প্রভাবে কি কি মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
- লিভার ক্যান্সার
- লিভার সিরোসিস
- কিডনি ড্যামেজ
- আরো কিছু শারীরিক জটিলতা
হেপাটাইটিস বি কি ছোঁয়াচে রোগ?
হেপাটাইটিস বি মূলত রক্ত আদান-প্রদান, সুচ বা সিরিঞ্জ, দেহ নিঃসৃত বিভিন্ন তরলের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। হাঁচি, কাশ্ চুম্বন, আলিঙ্গন ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ছড়ায় না। তাই হেপাটাইটিস বি যেহেতু কোন চর্মরোগ নয় তাই এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়।
হেপাটাইটিস বি কি ভালো হয়
আগেই বলা হয়েছে হেপাটাইটিস বি দুই রকম। চিকিৎসকগণ সর্বপ্রথম নির্ণয় করেন আক্রান্ত ব্যক্তির কোন ধরনের হেপাটাইটিস বি হয়েছে। একিউট হেপাটাইটিস বি এর জন্য তেমন কোনো চিকিৎসা বা ওষুধ এর প্রয়োজন নাই। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি এর জন্য কোন ধরনের অ্যান্টিভাইরাস ওষুধ দেওয়া যায় কিনা সেটা চিকিৎসক বুঝতে পারবে।
উল্লেখ্য, হেপাটাইটিস বি নিরাময় যোগ্য, একদম নির্মূল করা সম্ভব নয়।
হেপাটাইটিস বি হলে কি বিয়ে করা যায়
বেশকিছু কারণ এবং লক্ষণ জানার পর সাধারণ কৌতুহলী মনে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হেপাটাইটিস বি হলে কি বিয়ে করা যায়? সহজ করে বললে উত্তর হবে “না” অর্থাৎ আক্রান্ত অবস্থায় আপনি বিয়ে করতে পারবেন না। কারণ আক্রান্ত অবস্থায় বিয়ে করলে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীরও হেপাটাইটিস বি এ আক্রান্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে।
কারণ আপনারা স্বামী স্ত্রী একসাথে বসবাস করবেন। তাছাড়া আপনাদের সন্তানের উপরেও হেপাটাইটিস বি এর প্রভাব থাকবে। তাই আপনাদের এবং আপনাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আক্রান্ত অবস্থায় বিয়ে করা থেকে বিরত থাকুন। যেহেতু হেপাটাইটিস বি নিরাময় যোগ্য তাই নিয়মিত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিয়ে করুন।
হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিন
হেপাটাইটিস বি রোগে আক্রান্ত হতে না চাইলে একটিমাত্র কার্যকরী উপায় হচ্ছে টিকা বা ভ্যাকসিন নেয়া। বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে নবজাতক শিশুর জন্মের দিন থেকেই এই টিকা সরবরাহ করা হয়। হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিনের সর্বমোট পাঁচটি ডোজ রয়েছে। প্রথম তিনটি ডোজ পর পর তিন মাসে নিতে হয়, চতুর্থ ডোজের টিকা তৃতীয় ডোজ নেয়ার এক বছর পরে নিতে হয়।
বাচ্চার বয়স পাঁচ বছর বয়স হলে পঞ্চম ডোজের টিকা নিতে হয় যেটিকে বুস্টার ডোজ বলে। বড়দের ক্ষেত্রে যে কোন সময় যে কোন বয়সে হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিন নেয়া যায়। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিন নিতে হবে।
শেষ কথা
উপরের আলোচনা থেকে এটুকু পরিষ্কার বোঝা গেল হেপাটাইটিস বি আমাদের জীবনের জন্য কতটা মারাত্মক হুমকি স্বরূপ হতে পারে। তবে হেপাটাইটিস বি রোগে আক্রান্ত না হতে চাইলে আমাদেরকে সজাগ সচেতন হতে হবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ ধরা পড়লে অবহেলা না করে চিকিৎসকের নিয়মিত পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
যাইহোক, হেপাটাইটিস বি কেন হয়, হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ এবং হেপাটাইটিস বি এর প্রতিকার সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলাম। এতক্ষণ ধরে ধৈর্য সহকারে এই লেখাটি পড়ার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সেই সাথে আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি। লেখাটি পড়ে যদি নতুন কিছু জানতে পারেন তবে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url