ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা সহ ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু সুবিধা
মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায় | অফলাইন
বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা বিশ্বে চাকরির বাজার খুবই খারাপ। একটি চাকরি পাওয়া মানে সোনার হরিণ পাওয়ার মত। তবে অন্যের দাসত্ব না করে যদি নিজের মতো কাজ করে উপার্জন করা যায় অবশ্যই সেটি অন্য ধরনের ব্যাপার হয়। আর এই নিজের মতো করে কাজ করাই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু সুবিধা থাকার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা আছে।
"তথ্য প্রযুক্তি" এর আজকের এই পর্বে ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু সুবিধা এবং ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা সহ ফ্রিল্যান্সিং এর যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এই আর্টিকেলে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে দেখার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা
Freelancing এমন একটি জগত যেখানে কাজের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই অসংখ্য ধরনের অসংখ্য যোগ্যতার কাজ রয়েছে। আপনি আপনার পছন্দমত যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন কাজ বেছে নিয়ে ঘরে বসে কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং একটি ইংরেজি শব্দ। ফ্রী শব্দের অর্থ মুক্ত বা স্বাধীন। অর্থাৎ স্বাধীনভাবে কাজ করার যে পদ্ধতি তাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। আপনি কাজ করবেন কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে এর অর্থটা হচ্ছে আপনি কার কাজ করবেন, কিভাবে কাজ করবেন, কি কাজ করবেন, কখন কাজ করবেন সব কিছুই আপনি ঠিক করবেন।
বাজেট ৩০ হাজার টাকা? ফোন কিনতে চাচ্ছেন? এখান থেকে বিস্তারিত জেনে সিদ্ধান্ত নিন কেনারআপনি অন্যের কাজ করে দিবেন কিন্তু আপনার মর্জি মতো আপনি কাজ করবেন ব্যাপারটা সত্যিই কিন্তু মজার। যে ব্যাপারটা চাকরির ক্ষেত্রে একদমই দেখা যায় না. আপনাকে চাকরি করতে হয় অন্যের অধীনস্থ হয়ে. আপনার বস বা আপনার প্রতিষ্ঠানের মালিক আপনাকে যা বলবে যখন বলবে আপনাকে কাজ করে দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে চাকরির এটি সবচেয়ে বড় পার্থক্য। আপনার ইচ্ছা মত আপনি কাজ করতে পারবেন। আশা করি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে একটা পরিষ্কার স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে গেছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য যা অপরিহার্য
ডিভাইসঃ ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য অবশ্যই আপনার একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ এবং একটি স্মার্টফোন প্রয়োজন।
ব্রড ব্যান্ড কানেকশনঃ অনেকেই মনে করেন মোবাইলে যে ডাটা থাকে বা ইন্টারনেট প্যাকেজ থাকে সেটা দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। তবে সব ক্ষেত্রে আসলে এভাবে সম্ভব নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার অনেক পরিমাণে ডাটা লাগবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক প্রয়োজন।
ধৈর্যঃ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ধৈর্য। আপনি অনেক কাজ জানেন, আপনার অনেক দক্ষতা আছে, আপনার অনেক ক্লায়েন্ট কিন্তু আপনার কাজ করার ধৈর্য নেই। তাহলে কিন্তু আপনি সফল হতে পারবেন না। এমনও হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং এ শুরুর দিকে আপনি তেমন কোন কাজ পাবেন না বা আপনার তেমন কোন ইনকাম নাও হতে পারে, তবে আপনি যদি হাল ছেড়ে না দিয়ে ধৈর্য ধরে লেগে থেকে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন তবেই আপনি সফল হবেন। পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না।
স্কিলঃ অপরিহার্য অংশ হচ্ছে আপনার দক্ষতা। দক্ষতা ছাড়া আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতে এক দিনও টিকে থাকতে পারবেন না। আপনার অনেক গুণ নাও থাকতেই পারে তবে দক্ষতা ছাড়া এই জগতে প্রবেশ না করাই উত্তম।
কিছু উল্লেখযোগ্য ফ্রিল্যান্সিং সাইট
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করতে হলে আপনাকে ওয়ার্ক প্লেস থেকে কাজ বেছে বা খুঁজে নিতে হবে। এরকম বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্ক প্লেস আছে তবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইটের নাম নিচে দেওয়া হলঃ
- আপ ওয়ার্ক
- ফ্রিল্যান্সার ডট কম
- ফাইবার
- ক্রিয়েটিভ মার্কেট
- পিপল পার আওয়ার
বিঃদ্রঃ এসব সাইটে কাজ করতে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে। ইংরেজির উপর যত ভালো দক্ষ হবেন আপনার কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে তত সুবিধা হবে। তবে বাংলাদেশী কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে যেগুলোতে আপনাকে ইংরেজি না জানলেও চলবে। সেগুলোতে সম্পূর্ণ বাংলাতে যোগাযোগ করতে হবে ক্লায়েন্টের সাথে। যেমনঃ ডিল্যান্সারর ডট কম, বিল্যান্সারর ডট কম, কাজ খুঁজি ডট কম ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করতে হয়?
ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্র এতটাই বিশাল যে এর কোন পরিধি বা সীমা নেই। লক্ষ লক্ষ কাজ আছে ফ্রিল্যান্সিং এর ভেতরে তবে আমরা সেই লক্ষ লক্ষ কাজগুলোকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে যদি ভাগ করি তবে সহজে বোঝা যাবে যে কি কি ধরনের কাজ হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের যার যার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ বেছে নিতে পারবেন।
আপনি যেই কাজে যত দক্ষ হবেন সেই কাজে আপনি তত দ্রুত সফলতা পাবেন এবং একই সাথে আপনার উপার্জনও বাড়বে। আসুন জেনে নেই আমরা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় কাজ যেগুলো ফ্রিল্যান্সিং এ প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং
বর্তমান যুগে ফ্রিল্যান্সিং এর ভেতরে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। সাধারণত মার্কেটিং বলতে কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচার কে বোঝানো হয়। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে আপনার নিজের বা অন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার অনলাইন ভিত্তিক প্রচারকে বোঝায়। ডিজিটাল মার্কেটিং সার্চ ইঞ্জিন বা সোশ্যাল মিডিয়া যে কোন উপায়ে হতে পারে।
চাহিদা সম্পন্ন কিছু ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজসমূহ নিম্নরূপঃ
- কনটেন্ট মার্কেটিং
- সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- সিপিএ মার্কেটিং
- মোবাইল মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি।
ওয়েব ডিজাইন
ধরুন বাজারে আপনার একটি দোকান আছে এবং সে দোকানে আপনার যেসব পণ্য আপনি বিক্রি করতে চান সেগুলো আপনার একদমই অগোছালো এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাহলে কি আপনার ব্যবসা কি ভালো চলবে অবশ্যই না অবশ্য আপনাকে সুন্দর করে সেলফি বা অন্য কোথাও যে কোনোভাবেই হোক আপনার পণ্যকে সাজিয়ে সুন্দর করে ক্রেতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে আপনার এটি প্রযোজ্য আপনি যখনই একটা নিজস্ব প্রতিষ্ঠান চালাবেন অথবা আপনি মার্কেটিং করতে যাচ্ছেন অবশ্যই আপনার একটি ওয়েবসাইট দরকার ।যেখানে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা গুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে আপনার ক্লায়েন্ট বা কাস্টমারের সামনে উপস্থাপন করতে পারবেন ফলে আমরা কাস্টমার যত সহজে আকৃষ্ট হবে তত সহজে আপনি তার কাছ থেকে কাজ পাবেন এবং আপনার ইনকাম হবে।
আর আপনার এই ওয়েব সাইটটি সুন্দর করে সাজানোটাকে বলা হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন। বর্তমানে মাঝারি থেকে বড় মানের কোম্পানিগুলোর প্রত্যেকেরই নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকে। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে ওয়েব ডিজাইনের গুরুত্ব কতটা!
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলতে বোঝায় ওয়েবসাইট তৈরি করা। আপনার নিজের জন্য বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের জন্য আপনার কাছে যদি কোন অর্ডার আসে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সেটা যদি আপনি তৈরি করে দিতে পারেন তবে আপনি একজন ওয়েব ডেভেলপার।
সব সময় শুধু মার্কেটিং এর জন্যই যে ওয়েবসাইট প্রয়োজন তা নয় অনেক সময় ওয়েবসাইট মেন্টেনেন্স এর জন্য একজন ওয়েব ডেভেলপারের বিশেষ প্রয়োজন হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন বর্তমানে অনলাইন বিজনেস করতে হলে একজন ওয়েব ডেভলপারের প্রয়োজন কতটা!
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে HTML, JavaScript, CSS, Bootstrap ইত্যাদি।
আর্টিকেল রাইটিং
ফ্রিল্যান্সিংয়ের যতগুলো কাজ আছে তার মধ্যে অন্যতম সহজ কাজ অথচ চাহিদা সম্পন্ন কাজ হল আর্টিকেল রাইটিং। আর্টিকেল রাইটিং এ বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হয় যেমন আপনি কোন বিষয়ে লিখতে চাচ্ছেন বর্তমানে পাঠকরা কোন বিষয়টা বেশি জানতে চাই- সেই বিষয়ের উপর আপনাকে যথেষ্ট রিসার্চ করে গবেষণা করে তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যবহুলভাবে একটি আর্টিকেল লিখতে হবে।
এসইও কিওয়ার্ড টাইটেল এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলরাইটিং এর ক্ষেত্রে। আপনি নিজে কোন ওয়েবসাইটে আপনার নিজের লেখা পোস্ট করে ইনকাম করতে পারেন অথবা আপনার কোন ক্লায়েন্ট তার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অর্থের বিনিময়ে আর্টিকেল লিখতে বলতে পারে। আর্টিকেল রাইটিং এর জন্য নিজের কাজগুলো উল্লেখযোগ্যঃ
- ব্লগ রাইটিং
- নিউজ রাইটিং
- ইমেইল মার্কেটিং কন্টেন্ট
- রিসার্চ রাইটিং
- ট্রান্সলেশন
- রিজিউমি রাইটিং
- পডকাস্ট রাইটি
- সোশ্যাল মিডিয়া রাইটিং
গ্রাফিক্স ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইন মূলত একটি শিল্প। আপনার ভেতরে যদি কোন সৃজনশীল বিষয় না থেকে থাকে তবে আপনি কখনোই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। সৃজনশীল থাকার পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক পর্যায়ের স্কিল বা দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বোঝা যাচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন টা তুলনামূলকভাবে একটু কঠিন ঠিক সেইভাবে যেহেতু কঠিন এটার চাহিদা কিন্তু সেই রকম।
আরও পড়ুনঃ মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে যতগুলো কাজ আছে তার মধ্যে একজন ট্রাফিক্স ডিজাইনার সবচাইতে বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার তার ক্লায়েন্টের চাহিদা মোতাবেক কনটেন্ট তৈরি করে থাকে। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার নিচের কাজ গুলি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নিজের সৃজনশীলতা প্রদর্শনের মাধ্যমে করে থাকেন।
- ওয়েবসাইট ডিজাইন
- টাইপো গ্রাফি
- ফ্রন্ট ডিজাইন
- লোগো ডিজাইন
- অ্যাপ ডিজাইন
- পোস্টার ডিজাইন
- মেনু ডিজাইন
- ফ্যাশন ডিজাইন
- টি-শার্ট ডিজাইন ইত্যাদি।
ভিডিও এডিটিং
দিনে দিনে ভিডিও এডিটিং এর কাজ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে ফ্রিল্যান্সিং জগতে। কারণ বর্তমানে এটি চাহিদা যেমন বাড়ছে তেমনি পারিশ্রমিক ও দিনে দিন বাড়ছে। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মত অবশ্যই আপনাকে এই সেক্টরে অত্যন্ত দক্ষ হতে হবে।
ভিডিও এডিটিং এর খুঁটিনাটি সকল বিষয় আপনাকে একদম রপ্ত করতে হবে। সাধারণত ভিডিও রেকর্ড করার পরে বিভিন্ন ক্লিপগুলোকে একত্রিত করে বিভিন্ন সাউন্ড ইফেক্ট, ভিজুয়াল ইফেক্ট বা বিভিন্ন অ্যানিমেশন যোগ করে একটা পরিপূর্ণ আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করাকে বলা হয় ভিডিও এডিটিং এর কাজ।
একজন ভিডিও এডিটর নিম্নলিখিত কাজ গুলি করে থাকেন-
- ভিডিও টেমপ্লেট এডিটিং
- লোগো অনিমেশন
- ভিজুয়াল ইফেক্ট এর কাজ
- সাবটাইটেল
- Social video
- Music video
- অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ভিডিও
- কিডস ভিডিও
- কার্টুন ভিডিও ইত্যাদি।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO
আমাদের যখন কোন তথ্যের প্রয়োজন হয় তখন আমরা google এ সেই বিষয়টা লিখে সার্চ করি এতে ফলাফল হিসেবে কয়েক হাজার ওয়েবসাইটের তথ্য আসে তবে তার মধ্যে কিছু কিছু ওয়েবসাইটের বা কিছু কিছু আর্টিকেল সবার প্রথমে আসে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে আমরা আমাদের লেখা বা ব্লক বা তথ্য বা আর্টিকেলকে সার্চ ইঞ্জিনের সবার প্রথমে নিয়ে আসতে পারি।
অবশ্যই পড়ুনঃ যে সব জায়গায় ফোনে কথা বলা যাবে না
এটি করার জন্য অবশ্যই বিশেষ কিছু কৌশল রয়েছে সেই কৌশল গুলো ভালো মতো রক্ত করতে পারলে সহজে আমরা এ কাজটিকে সমাধান করতে পারি। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করলে আমরা সহজেই যেকোনো তথ্য খুব কম সময়ে এবং দ্রুত আমাদের ক্লাইন্ট বা কাস্টমারের সামনে তুলে ধরতে পারব।
এতে খুব অল্প সময়ে যেমন ট্রাফিক বাড়বে ঠিক একইভাবে অল্প সময়ে যেকোনো প্রজেক্ট আমরা সম্পূর্ণ করতে পারবো। দিনে দিনে ফ্রিল্যান্সারদের মাঝে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজটি খুবই পছন্দের তালিকায় উঠে আসছে।
ডাটা এন্ট্রি
একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ডাটা প্রয়োজন হয় তার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য এই ডাটা বা তথ্য হতে পারে তার নিজ দেশে অথবা অন্য কোন দেশের। আপনি যদি ডাটা এন্ট্রি কাজ করে থাকেন তবে আপনার কাজ হবে আপনার ক্লায়েন্টের চাহিদা মত ডাটা কে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে তার সামনে উপস্থাপন করা।
এক্ষেত্রে ডাটা বা তথ্য ফিজিক্যাল বা ডিজিটাল যেকোনো রকমই হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজের মধ্যে ডাটা এন্ট্রির কাজ সবচাইতে সহজ কারণ এতে সবচেয়ে কম স্কিল নিয়ে আপনি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রি তে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আপনাকে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবেঃ
- ডাটা ইনপুট দেয়া
- কপি পেস্ট করা
- ডাটা মাইনিং
- ডাটা স্ক্রাপিং
- ডাটা এডিটিং
- টাইপিং
- ফর্ম পূরণ ইত্যাদি
একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের অবশ্যই ভালো টাইপিং স্পিড থাকতে হবে, বেশ কয়েকটি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে, সেই ভাষার বানান সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে, তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা এবং সেই সাথে তথ্য এনালাইসিসের দক্ষতা ও থাকতে হবে, মাইক্রোসফট অফিসের সকল কাজ দক্ষতার সাথে জানতে হবে।
ট্রান্সলেশন
যেকোনো রকমের কনটেন্ট যেমন কোনো আর্টিকেল কোন গল্প কোন উপন্যাস কোন গানের লিরিক্স সম্পূর্ণ বই এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তরকেই বলা হয় ট্রান্সলেশন। আপনি যদি যথেষ্ট শিক্ষিত এবং কোন ভাষার উপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকে তবে সহজেই ট্রান্সলেশন এর কাজটি নিতে পারেন। হয়ে উঠতে পারেন একজন ট্রান্সলেটর।
একজন ট্রান্সলেটর কে নিজের কাজগুলো করতে হয়ঃ
- ইমেইলের অনুবাদ
- কোন নিউজ এর অনুবাদ
- কোন চুক্তি নামা বা দলিলের অনুবাদ
- সাবটাইটেল অনুবাদ
- কোন রিসার্চ পেপারের অনুবাদ ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা
অসুবিধা থাকলেও ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু সুবিধা আছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা উল্লেখ করা হলো।
ইনকামঃ
ঘরে বসে কাজ করে ইনকাম করার জন্যই বর্তমান সময়ের ফ্রিল্যান্সিং এতটা জনপ্রিয় হয়েছে। আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে আপনার উপার্জন। আপনি যত বেশি কাজ করবেন আপনার বর্জন তত বেশি হবে। আপনি যত দক্ষতা অর্জন করবেন আপনার কাজের চাহিদা ততো বাড়বে এবং আপনার ইনকাম ততই বাড়বে।
কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে এই সুবিধাটা পাওয়া যায় না আপনি যতই ভালো কাজ করেন না কেন আপনার নির্দিষ্ট একটা বেতন শেষে আপনাকে দেওয়া হবে। রাত দিন জেগে কাজ করলে মাসে প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। চাকরিতে যেটা সম্ভব নয়।
দলগত কাজঃ
দলগত কাজের বিশেষ সুবিধা রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে। অনেক সময় দলগতভাবে কাজ করলে যেমন কাজটা দ্রুত হয় ঠিক তেমনি বিভিন্ন জনের ধারনা, কৌশল বা দক্ষতা শেয়ার করার মাধ্যমে নিজের দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়।
কাজঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে কাজ আপনার যেটা ইচ্ছা হবে আপনি সে কাজ করবেন, যেটা ইচ্ছা হবে না সেটা করবেন না এবং সেটা অবশ্যই আপনার স্কিল অনুযায়ী। যে বিষয়ে যে কাজে আপনার স্কিল আছে সেই কাজটি আপনি বেছে নিয়ে করতে পারবেন। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে হয় উল্টা। আপনি যেটা পারেন বা যেটা পারেন না আপনাকে সবই করতে হবে।
সময়:
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করার অন্যতম বড় সুবিধা হচ্ছে সময় আপনি সময়কে আপনার নিজের মত কাজে লাগাতে পারবেন। আপনি সময়ের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পাবেন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য। একটা কাজ আপনি কখন করবেন সেটা একমাত্র আপনি সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন। আপনি কাজটি সকালে ফজরের নামাজ পড়ে করতে পারেন, আপনি দুপুরে ঘুমাতে পারেন, বিকেলে উঠে কাজটি করতে পারেন, সন্ধ্যা থেকে করতে পারেন, সারারাত জেগে কাজটি করতে পারেন।
আপনার যখন ইচ্ছা তখন আপনি আপনার সময় কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন এবং এই সময়ের ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় পার্থক্য চলে আসে চাকরির সাথে। আপনাকে সব সময় নির্দিষ্ট সময় মেনে চলতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে আপনাকে অফিসে যেতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আপনাকে কাজটি শেষ করতে হবে আর যদি শেষ করতে না পারেন তবে সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক কটু কথা শুনতে হতে পারে।
পছন্দ মত কাজের জায়গাঃ
যেহেতু আপনি আপনার নিজের মনের মতো নিজের সময় মত নিজের জায়গা মত ফ্রিল্যান্সিং কাজটা করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট কোন অফিস বা রুম বা নির্দিষ্ট কোন জায়গার প্রয়োজন নাই আপনি যেখান সেখানে কাজ করতে পারেন। আপনি কোন ট্রাভেল করছেন, বাসে বা ট্রেনে ল্যাপটপ নিয়ে আপনি আপনার কাজটা করতে পারেন।
আপনি হয়তো কারো বাসায় বেড়াতে গেছেন, মোবাইলে বা ল্যাপটপে আপনার কাজটা সেরে ফেলতে পারেন। আপনি যখন যেখানে থাকবেন সেটাই আপনার অফিস হয়ে যাবে।
ছাত্র জীবনেও ইনকামঃ
একমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি ইনকাম করে নিজের এবং পরিবারের খরচ চালাতে পারেন। আসলে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সার্টিফিকেট বা ডিগ্রির প্রয়োজন হয় না। অবসর সময়কে কাজে লাগিয়েই উপার্জন করা সম্ভব।
ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা
পৃথিবীতে কোন জিনিসেরই শুধু ভাল দিক বা শুধু খারাপ দিক নেই। ভালো খারাপ মিলিয়ে প্রত্যেকটা জিনিস আছে। সেই হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর ও সামান্য কিছু খারাপ দিক আছে তবে এর সুবিধার যে বিশালতা সেটার তুলনায় আসলে ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা খুবই নগণ্য। আসুন আমরা সে সম্পর্কে জেনে নেই।
ভিটামিনের অভাবঃ একটানা অনেকক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করতে হয় বিধায় বাইরে অনেকে বের হতে পারে না আর বাইরে বের না হওয়ার কারণে সূর্য রশ্মি থেকে সে বঞ্চিত হয় আর সূর্যতে থাকে ভিটামিন ডি। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এক সপ্তাহ দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বের না হন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হতে পারে। ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড়ের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়।
বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাঃ দক্ষতা অর্জন করতে করতে এমন একটা অবস্থানে আপনারা চলে যাবেন যখন দেখবেন আপনার অসংখ্য কাজ, আপনি একা কাজ করে কুলাতে পারছেন না। কিন্তু কাজগুলো ফেলে দিলে তো ইনকামও আসবে না। তাই প্রত্যেকটা কাজই যদি আপনি করতে চান অনেকক্ষণ ধরে আপনাকে ল্যাপটপ বা কম্পিউটারএর সামনে বসে থাকতে হবে।
সেই ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় যেমন প্রথম যে সমস্যাটা হয় সেটা হচ্ছে স্থুলতা অর্থাৎ মোটা হয়ে যাওয়া, ভুড়ি হয়ে যাওয়া।
দক্ষতা হালনাগাদ করতে হবেঃ ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের অবস্থানটা শক্তভাবে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন নিত্যনতুন তথ্যের সাথে পরিচিত হতে হবে। আপনি যে দক্ষতাটা এতদিন অর্জন করেছেন সেটির হালনাগাদ করতে হবে। নিত্যনতুন কলাকৌশল সম্পর্কে আপনাকে অবহিত হতে হবে। তা না হলে আপনার কর্মক্ষেত্র দিনে দিনে ছোট হয়ে আসবে।
ইনকামের তারতম্যঃ সঠিকভাবে পরিশ্রম করলে আপনার ইনকাম যেমন নিশ্চিত ফ্রিল্যান্সিং থেকে তবে এটাও ঠিক প্রত্যেক মাসে আপনি একই পরিমাণ উপার্জন করতে পারবেন না বিভিন্ন কারণ হতে পারে যেমন ধরুন আপনি কোন মাসে 10 দিন অসুস্থ থাকলেন অথবা আপনি জরুরী কোন কাজে বাইরে কোথাও গিয়েছেন যেখানে আপনি আপনার কাজ করার সুযোগ পেলেন না।
এসব ক্ষেত্রে আগের মাসের তুলনায় এই মাসে ইনকাম কম হবে এটাই স্বাভাবিক। আবার এই মাসে আপনি বিশেষ কোনো কারণে কাজ করতে পারেনি বিধায় ইনকাম কম হয়েছে। আগামী মাসে যদি আপনি মনে করেন যে কয়েক ঘন্টা বেশি কাজ করে সেটা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন অবশ্যই আপনার আগামী মাসে ইনকাম বেশি হবে।
লেখকের মন্তব্য
চাকরি করার চেয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করে উপার্জন করা সত্যিই অনেক ভালো। যারা ফ্রিল্যান্সিং এ আছেন তারা এই কথাটা অবশ্যই জানেন। আর যারা নতুন তাদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে, আপনারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হতে পারবেন অবশ্যই যদি আপনাদের ধৈর্য থাকে, নতুন যে কোন কিছু জানার আগ্রহ থাকে, যদি আপনারা কঠোর পরিশ্রমী হন এবং সৎ থাকেন।
আজকের লেখাটিতে ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা সহ ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু সুবিধা সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানানোর চেষ্টা করলাম। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আর কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url